সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় তা হয়তো আমারা অনেকে জানি, অনেকে আবার জানি না। আমরা অনেকেই আছি যারা শুকনো শরীর নিয়ে বেশি চিন্তিত থাকি। তাই সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় জানতে হলে আজকের প্রবন্ধটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
আমর অনেকে মোটা হতে বেশি পছন্দ করি আবার কোউ চিকন থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যেবোধ করি। তবে একেবারে শুকনো বা চিকন শরীর কারো কাম্য নয়। তাই যাদের শরীর অতিরিক্ত চিকন তারা একটু মোটা হওয়ার জন্য নানা ধরনের চেষ্টা করে থাকেন। সেজন্য সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় সকল কিছু জানতে পারবেন আজকের এই আটিকেলটি পড়লে। পোস্ট সূচিপত্রঃ
সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়
সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় জানলে আপনাদের ওজন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া অনেকটাই সহজ হবে। কারণ ওজন বৃদ্ধি করতে চাইলে শুধুমাত্র বেশি খাওয়া যথেষ্ট নয়, বরং সঠিক খাবার সঠিক সময়ে খাওয়াটা জরুরি। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে কী খাচ্ছেন তা আপনার শরীরের ওজন বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখে। এই সময় খালি পেটে শরীরের শোষণ ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি থাকে।
প্রথমেই ফলমূল এবং শুকনো ফল খাওয়া যেতে পারে। খেজুর, কিশমিশ, বাদাম, আখরোট বা কাজুবাদাম সকালে খালি পেটে খেলে শরীরে ক্যালোরি ও ফ্যাট দ্রুত জমা হয়। এগুলোতে ভালো মানের ফ্যাট ও প্রোটিন থাকে, যা ওজন বাড়াতে সহায়ক। একইসাথে এ ধরনের খাবার শরীরকে শক্তি জোগায়।
দুধ এবং কলা ওজন বৃদ্ধির অন্যতম সেরা উপায়। সকালে খালি পেটে এক গ্লাস দুধের সাথে কলা খেলে শরীর প্রয়োজনীয় কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট পায়। নিয়মিত দুধ-কলার এই সংমিশ্রণ ওজন বৃদ্ধিতে কার্যকর হিসেবে পরিচিত।এর সাথে মধু মিশিয়েও খাওয়া যায়, এতে শরীরে বাড়তি শক্তি যোগ হয়।
ভাত, রুটি বা ভাজা জাতীয় ভারী খাবার খালি পেটে খাওয়া ঠিক নয়। তবে হালকা সেদ্ধ ডিম বা অল্প মাখন-পরোটা খাওয়া যেতে পারে। ডিমের কুসুমে প্রোটিন ও ভালো ফ্যাট থাকে, যা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া ঘি বা মাখনের ব্যবহারও শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি যোগ করে।
সবশেষে, খালি পেটে জাঙ্ক ফুড বা অতিরিক্ত তেল-ঝাল খাবার না খাওয়াই ভালো। এগুলো স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। বরং পুষ্টিকর খাবার যেমন—দুধ, কলা, খেজুর, বাদাম, ডিম ইত্যাদি নিয়মিত খাওয়া উচিত। নিয়ম মেনে ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুললে খুব সহজেই ওজন বৃদ্ধি সম্ভব।
ফলের জুস খেয়ে মোটা হওয়ার উপায়
স্বাস্থ্যকর উপায়ে মোটা হওয়ার জন্য সকালে খালি পেটে খেতে পারেন বিভিন্ন ধরনের ফলের জুস।ফলের জুস স্বাভাবিকভাবে ভিটামিন, খনিজ এবং শক্তি দিয়ে ভরপুর। ওজন বাড়ানোর জন্য এই জুসগুলো দেহকে পুষ্টি সরবরাহ করে। বিশেষ করে কলা, আম, পেঁপে, এবং আঙ্গুরের মতো ফলের জুস বেশি ক্যালোরি প্রদান করে, যা দেহে চর্বি এবং পেশী বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
ওজন বাড়াতে হলে উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত ফল যেমন: কলা, পাকা আম, আনারস, পেঁপে, এবং খেজুরের জুস বেশি করে পান করতে হবে। এই ধরনের ফল শরীরে দ্রুত শক্তি যোগ করে এবং ভেতরের চর্বি স্তর তৈরি করতে সাহায্য করে।
ফলের জুসে যদি দুধ বা দই মেশানো হয়, তবে এটি ক্যালোরি ও প্রোটিনের পরিমাণ বাড়ায়। দুধ বা দইয়ের সাথে কলা বা পাকা আমের জুস মিশিয়ে দিনে ২–৩ বার পান করলে শরীরের পেশী শক্ত হয় এবং চর্বি জমা বৃদ্ধি পায়। এটি এমন একটি সহজ উপায় যা সুস্থভাবে মোটা হতে সাহায্য করে।
ফলের জুস দিয়ে ওজন বাড়াতে হলে নিয়মিত খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন সকালের নাস্তায় এবং বিকেলে ফলের জুস পান করতে হবে। একবারে খুব বেশি খাওয়ার পরিবর্তে ছোট ছোট পরিমাণে দিনে কয়েকবার জুস পান করা ভালো। এটি হজম সহজ করে এবং শরীর ধীরে ধীরে ওজন বাড়ায়।
ফলের জুস খাওয়ার সঙ্গে ব্যায়াম বা হালকা ওজনের ব্যায়াম করা উচিৎ। এটি পেশী বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে সুন্দরভাবে মোটা হতে সাহায্য করে। এছাড়া পর্যাপ্ত ঘুম, পর্যাপ্ত পানি পান, এবং পুষ্টিকর খাবার ও প্রোটিন গ্রহণও গুরুত্বপূর্ণ।
সিদ্ধ আলু খেয়ে মোটা হওয়ার নিয়ম
মোটা হওয়ার তাগিদে সকালে খালি পেটে খেতে পারেন সিদ্ধ আলু। সিদ্ধ আলু ভিটামিন, খনিজ এবং কার্বোহাইড্রেটের অন্যতম উৎস। এটি সহজে হজম হয় এবং শরীরকে শক্তি যোগায়। নিয়মিত সিদ্ধ আলু খেলে শরীরের ক্যালোরি স্তর বাড়ে, যা মোটা হওয়ার প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে। আলুতে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা শরীরের শক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং ক্ষুধা বাড়ায়।
মোটা হতে হলে দিনে ২–৩টি মাঝারি সাইজের আলু সিদ্ধ করে খাওয়া যেতে পারে। একবারে বেশি খাওয়ার বদলে দিনে কয়েকবার আলু খাওয়া ভালো। আলু খাওয়ার সময় তেল বা মাখন যোগ করলে ক্যালোরি আরও বাড়ে, যা স্বাস্থ্যকরভাবে ওজন বাড়াতে সহায়ক।
সিদ্ধ আলু প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে খেলে পেশী বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, আলুর সঙ্গে ডিম, দুধ, পনির বা চিংড়ি খেলে শরীরের ওজন এবং পেশীর ঘনত্ব উভয়ই বৃদ্ধি পায়। প্রোটিন শরীরের চর্বি এবং পেশী দুটোই বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
ওজন বাড়াতে হলে আলু নিয়মিত খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন সকালের নাস্তায়, দুপুরের খাবারে বা বিকেলের স্ন্যাকস হিসেবে আলু খাওয়া যেতে পারে। একবারে বেশি না খেয়ে ছোট ছোট ভাগে আলু খেলে হজম সহজ হয় এবং শরীরের ওজন ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।
সিদ্ধ আলু খাওয়ার সঙ্গে হালকা ব্যায়াম করলে পেশী শক্ত হয় এবং মোটা হওয়া স্বাস্থ্যকর হয়। পর্যাপ্ত ঘুম, পর্যাপ্ত পানি পান এবং পুষ্টিকর খাবার ও প্রোটিন গ্রহণও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সব অভ্যাস মেনে আলু খেলে শরীর সুস্থ ও স্বাস্থ্যকরভাবে মোটা হয়।
প্রোটিন সেক খালি পেটে খাওয়ার নিয়ম
নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর উপায়ে মোটা হতে সহায়তা করবে সকালে খালিপেটে প্রোটিন সেক। প্রোটিন শেক পেশী বৃদ্ধি ও শরীরের শক্তি যোগাতে সহায়ক। খালি পেটে প্রোটিন শেক খেলে শরীর দ্রুত পুষ্টি শোষণ করে। এটি বিশেষভাবে যাদের ওজন বাড়ানো বা পেশী গঠনের লক্ষ্য রয়েছে, তাদের জন্য কার্যকর। প্রোটিন শেকে সাধারণত Whey, Soy বা Plant-based প্রোটিন থাকে।
খালি পেটে প্রোটিন শেক খাওয়ার জন্য সকালে ঘুম থেকে ওঠার ৩০–৪৫ মিনিটের মধ্যে সবচেয়ে ভালো। এই সময় দেহের মেটাবলিজম দ্রুত কাজ করে এবং পুষ্টি শোষণ ক্ষমতা বেশি থাকে। শারীরিক কার্যকলাপের আগে বা হালকা ব্যায়ামের পরও প্রোটিন শেক খাওয়া যেতে পারে।
প্রতি শেকের জন্য সাধারণত ২০–৩০ গ্রাম প্রোটিন যথেষ্ট। একবারে অতিরিক্ত প্রোটিন নেওয়া হজমের সমস্যা বা কিডনিতে চাপ বাড়াতে পারে। প্রোটিন শেককে দুধ, পানি বা বাদামের দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে সহজে হজম হয়।
খালি পেটে প্রোটিন শেক খাওয়ার পরে ৩০–৬০ মিনিটের মধ্যে হালকা নাশ্তা বা খাবার খাওয়া ভালো। যেমন: ওটস, ফল বা ডিমের স্যান্ডউইচ। এতে প্রোটিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং পেশী বৃদ্ধি সুসংগত হয়।
প্রোটিন শেক খাওয়ার সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি পান, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুম রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং সঠিক পুষ্টি মেনে চললে খালি পেটে প্রোটিন শেক খাওয়া শরীরকে সুস্থভাবে পেশীশক্তি ও ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
খালি পেটে দুধ খাওয়ার উপকারীতা
সকালে খালি পেটে দুধ খাওয়া শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী। দুধ প্রাকৃতিকভাবে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি এবং অন্যান্য খনিজে সমৃদ্ধ। সকালে খালি পেটে দুধ খেলে এই পুষ্টিগুণ সরাসরি শরীরে হয়, যা হাড় ও দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে।
দুধে থাকা প্রোটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সকালে খালি পেটে দুধ খেলে শরীরের ইমিউন সিস্টেম সক্রিয় হয়, ফলে সর্দি-কাশি, জ্বর এবং অন্যান্য সাধারণ অসুখ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
দুধ হজমের জন্যও উপকারী। খালি পেটে দুধ খেলে পাকস্থলীর জন্য হালকা প্রোটিন সরবরাহ হয়, যা হজম প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে এবং পেটের অতিরিক্ত অ্যাসিডিটি কমায়। এছাড়াও, এটি অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে দুধ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সকালে খালি পেটে দুধ খেলে শরীর দীর্ঘ সময় পরিপূর্ণ থাকে এবং অতিরিক্ত খাবারের প্রবণতা কমায়। এতে করে স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখতে সহায়তা হয়।
চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা সাধারণত সকালে দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন। যদি আপনি দুধের সঙ্গে এক চামচ মধু বা বাদাম মিশান, তবে তা আরও বেশি পুষ্টিকর এবং শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। নিয়মিত খালি পেটে দুধ খাওয়া আপনাকে শক্তিশালী, সুস্থ ও সতেজ রাখবে।
চিনাবাদাম খেয়ে মোটা হওয়ার নিয়ম
সকালে খালি পেটে খেতে পারেন এক মুঠো পরিমাণ চিনা বাদাম। চিনাবাদাম প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ একটি সুস্বাদু বাদাম। শরীরের ওজন বাড়াতে চাইলে নিয়মিত চিনাবাদাম খাওয়া খুবই উপকারী। এটি শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালরি সরবরাহ করে, যা ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যকরভাবে ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
সকালে খালি পেটে বা দুধের সঙ্গে চিনাবাদাম খেলে এটি শরীরের জন্য শক্তি যোগায়। ৫–১০টি চিনাবাদাম নরম করে চিবিয়ে খাওয়া সবচেয়ে ভালো। এতে শরীর সহজে প্রোটিন ও ক্যালরি শোষণ করতে পারে।
দুপুর বা বিকেলে স্ন্যাকস হিসেবে চিনাবাদাম খাওয়াও ওজন বাড়ানোর জন্য কার্যকর। একসাথে অন্যান্য খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে শরীরের পুষ্টি মাত্রা বাড়ে এবং হালকা ক্ষুধা কমায়।চিনাবাদামের সঙ্গে দুধ, ডিম বা পনির খেলে ওজন বৃদ্ধি আরও দ্রুত হয়।
নিয়মিত এবং পরিমিত পরিমাণে চিনাবাদাম খাওয়াই মূল কথা। অতিরিক্ত খেলে ওজন দ্রুত বাড়লেও পাচনতন্ত্রের সমস্যা হতে পারে। সুতরাং স্বাস্থ্যকরভাবে মোটা হতে চাইলে প্রতিদিন ৮–১২টি চিনাবাদাম নিয়মিত খাওয়া উত্তম।
বাটার মিল্ক খেয়ে মোটা হওয়ার উপায়
বাটার মিল্ক প্রাকৃতিকভাবে হালকা ও পুষ্টিকর পানীয়। এটি প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাটে সমৃদ্ধ। ওজন বাড়াতে চাইলে প্রতিদিন খালি পেটে বা খাবারের সঙ্গে বাটার মিল্ক খাওয়া খুবই কার্যকর। সকালে খালি পেটে এক গ্লাস বাটার মিল্ক খেলে শরীরের হজম প্রক্রিয়া সক্রিয় হয় এবং পুষ্টি দ্রুত শোষিত হয়। এতে শরীর প্রয়োজনীয় ক্যালরি পায়, যা ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যকরভাবে ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
বাটার মিল্কে থাকা প্রোবায়োটিকস অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখে। এটি হজম সহজ করে, পেট সুস্থ রাখে এবং ওজন বাড়ানোর জন্য পুষ্টি শোষণকে আরও কার্যকর করে তোলে। সেজন্য আমরা নিয়মিত অল্প পরিমাণে বাটার মিল খাবো।
দুপুর বা বিকেলে স্ন্যাকস হিসেবে বাটার মিল্ক খাওয়া উপকারী। চাইলে এতে চিনিযুক্ত বা বাদাম মেশিয়ে খাওয়া যেতে পারে, যা ক্যালরি ও স্বাদ বৃদ্ধি করে। প্রতিদিন ১–২ গ্লাস বাটার মিল্ক নিয়মিত খেলে ওজন বাড়ানোর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়।
বাটার মিল্ক খাওয়ার সঙ্গে সুষম খাদ্য ও হালকা ব্যায়াম মিলিয়ে নিলে ফলাফল আরও ভালো হয়। রাতের খাবারের আগে ছোট পরিমাণে বাটার মিল্ক খাওয়া শরীরকে পুনর্গঠন করতে সাহায্য করে। নিয়মিত খেলে আপনি স্বাস্থ্যকরভাবে মোটা ও শক্তিশালী হয়ে উঠবেন।
খেজুর খেয়ে মোটা হওয়ার উপায়
সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় আলোচনার প্রেক্ষিতে এখন আপনাদের জানাবো খেজুর খেয়ে মোটা হওয়ার উপায় সম্পর্কে। খেজুর একটি পুষ্টিগুণে ভরপুর ফল যা শরীরের জন্য শক্তি ও ক্যালোরির অন্যতম উৎস। নিয়মিত খেজুর খেলে শরীরে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে, কারণ এতে প্রাকৃতিক চিনি, ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ বিদ্যমান। শরীর মোটা করার জন্য খেজুর একটি কার্যকর খাবার হতে পারে।
প্রথমত, খেজুরে গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ নামক প্রাকৃতিক চিনি রয়েছে যা শরীরকে তাত্ক্ষণিক শক্তি প্রদান করে এবং ওজন বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালোরি জোগায়। নিয়মিত সকালে দুধের সাথে ৩-৫টি খেজুর খেলে শরীরে দ্রুত শক্তি যোগায় এবং ধীরে ধীরে ওজন বাড়াতে সহায়তা করে।
দ্বিতীয়ত, খেজুর খাওয়ার মাধ্যমে ক্ষুধা বাড়ে। যারা কম খেতে পারেন বা খাবারে অনীহা বোধ করেন, তাদের জন্য খেজুর একটি প্রাকৃতিক অ্যাপেটাইজার হিসেবে কাজ করে। খাবারের আগে ২-৩টি খেজুর খেলে হজমশক্তি ভালো হয় এবং মূল খাবার খাওয়ার ইচ্ছা বাড়ে।
তৃতীয়ত, খেজুরে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, পটাশিয়াম ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্স আছে যা শরীরকে স্বাস্থ্যকরভাবে মোটা হতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যারা রোগা এবং দুর্বল বোধ করেন, তারা নিয়মিত খেজুর খেলে শরীরে রক্ত ও শক্তি বৃদ্ধি পায়, ফলে স্বাভাবিকভাবে ওজন বাড়ে।
সবশেষে, খেজুর খেয়ে মোটা হতে চাইলে সঠিক নিয়মে খেতে হবে। প্রতিদিন দুধ, বাদাম বা অন্যান্য উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবারের সাথে খেজুর খাওয়া সবচেয়ে কার্যকর। তবে অতিরিক্ত খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে, তাই প্রতিদিন ৫-৭টি খেজুরই যথেষ্ট।
খালি পেটে মধু কলা খাওয়ার নিয়ম
মোটা হওয়ার জন্য সকালে খালি পেটে জন্য ডায়েটে রাখুন মধু ও কলা। মধু এবং কলা দুটোই প্রাকৃতিক পুষ্টিগুণে ভরপুর খাবার। খালি পেটে মধু কলা খেলে শরীর দ্রুত শক্তি পায় এবং হজমশক্তি ভালো হয়। বিশেষ করে যারা শরীর ফিট রাখতে চান বা সুস্থভাবে ওজন বাড়াতে চান, তাদের জন্য এটি একটি দারুণ খাবার হতে পারে। তবে খাওয়ার নিয়ম ঠিকভাবে মেনে চলা জরুরি।
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে ১-২টি পাকা কলা খেয়ে তার সাথে এক চামচ খাঁটি মধু খাওয়ার অভ্যাস করা যায়। এতে শরীর তাত্ক্ষণিক গ্লুকোজ পায়, যা সারাদিন কাজ করার শক্তি জোগায়। পাশাপাশি কলার ফাইবার ও মধুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে সতেজ রাখে।
খালি পেটে মধু কলা খাওয়ার সময় পানি পান এড়িয়ে চলা ভালো। কারণ একসাথে বেশি পানি খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। বরং কলা ও মধু খাওয়ার ২০-৩০ মিনিট পর পানি পান করলে শরীর খাবার সহজে হজম করতে পারে।
ওজন বাড়াতে চাইলে মধু কলার সাথে হালকা দুধ বা বাদাম খাওয়া যেতে পারে। আবার ওজন কমাতে চাইলে শুধুমাত্র কলা ও মধু খেলে যথেষ্ট। এভাবে খেলে শরীর প্রয়োজন অনুযায়ী ক্যালোরি পায় এবং স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
খালি পেটে প্রতিদিন মধু কলা খেলে শরীর শুধু পুষ্টিই পায় না, বরং কোষ্ঠকাঠিন্য, হজমের সমস্যা ও দুর্বলতা থেকেও মুক্তি মেলে। তবে অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়; প্রতিদিন ১-২টি কলা ও ১-২ চামচ মধুই যথেষ্ট। নিয়মিত অভ্যাসে এটি শরীরকে স্বাস্থ্যকর ও কর্মক্ষম রাখবে।
পরিশেষে
সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় এবং কোন খাবার আমাদের শরীরের জন্য পুষ্টিকর তা আমরা জেনেছি। সকালেই খালি পেটে এমন অনেক খাবার আছে যেগুলো খেলে শরীরের জন্য উপকার। আমরা পুষ্টিগুণ বিবেচনা করে এ সকল খাবার গ্রহণ করব।
সকালে চিনা বাদাম খেলে কি হয় এবং খালি পেটে সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি এবং খালি পেটে সকালে দুধ খেলে কলা খেলে কতটুকু পুষ্টিগুণ পাওয়া যায় এ সকল কিছু আমরা জেনেছি। তাই নিয়মিত এরকম আরো পোস্ট পেতে এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;
comment url