কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার কার্যকর ঘরোয়া উপায় গুলো

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় রয়েছে তবে সেগুলো আমাদের জানতে হবে। কোষ্ঠকাঠিন্য এমন একটি সমস্যা যা আমদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে যে ঘরোয়া উপায় গুলো সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব আজকের এই আর্টিকেলে। 

কোষ্ঠকাঠিন্য-দূর-করার-ঘরোয়া-উপায়

কোষ্ঠকাঠিন্য আসলেই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বড় সমস্যা। এজন্য এটির সমাধান আমাদের দরকার। কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দুর করতে হবে। সেজন্য কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার যে ঘরোয়া উপায় গুলো রয়েছে বা অন্য যে উপায় রয়েছে তা জানতে পারবেন আজকের এই আর্টিকেলটি পড়লে। পোস্ট সূচিপত্রঃ

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানা থাকলে কঠিন এই সমস্যা থেকে সহজে আমরা দূরে থাকতে পারি। কোষ্ঠকাঠিন্য হলো একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা, যা মূলত আমাদের খাদ্যাভ্যাস, জলপান, শারীরিক কার্যক্রম ও মানসিক চাপের কারণে হয়ে থাকে। এটি দীর্ঘস্থায়ী হলে পেট ফুলে যাওয়া, অস্বস্তি, মাথা ঘোরা এবং অন্যান্য হজমজনিত সমস্যার কারণ হতে পারে। তবে ঘরে বসে কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

কোষ্ঠকাঠিন্য-দূর-করার-ঘরোয়া-উপায়

খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। রেশাযুক্ত খাবার যেমন ফল, সবজি, ও পুরো শস্য জাতীয় খাবার নিয়মিত খেলে অন্ত্রের চলাচল স্বাভাবিক থাকে। বিশেষ করে কলা, আপেল, গাজর, পেঁয়াজ এবং ছোলা বা ডাল প্রভৃতি খাবার অন্ত্রে ফাইবার সরবরাহ করে।

পর্যাপ্ত পানি পান করা কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে অপরিহার্য। দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করলে পায়খানা নরম থাকে। ঠান্ডা পানি বা অতিরিক্ত চা-কফি কম খাওয়া উচিত কারণ এগুলো দেহের জল কমিয়ে দেয়। এছাড়া ফলের রস লেবুর পানি বা নারকেল পানি পান করলেও হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।

শারীরিক কার্যক্রম বাড়ানোও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাটাহাটি, ব্যায়াম, যোগব্যায়াম বা পেট ও কোমরের হালকা ব্যায়াম অন্ত্রের পেশি সক্রিয় রাখে এবং খাদ্য সহজে হজম হতে সাহায্য করে। দীর্ঘ সময় বসে থাকার পরিবর্তে মাঝে মাঝে দাঁড়ানো বা হাটাহাটি করা অন্ত্রের গতি ঠিক রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়।

প্রয়োজন হলে ঘরোয়া ল্যাকটিক খাবার বা প্রোবায়োটিক ব্যবহার করতে পারেন। দই, চিপসযুক্ত প্রোবায়োটিক খাবার বা ঘরে তৈরি ছানা অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াকে সুস্থ রাখে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। নিয়মিত এই অভ্যাসগুলো মেনে চললে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা সহজ হয়ে যায়।

কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়

কোষ্ঠকাঠিন্য হলো একটি সাধারণ হজমজনিত সমস্যা, যা যখন অন্ত্রের কার্যক্রম ধীর হয়ে যায় এবং পায়খানা নিয়মিত বা সহজে বের হয় না তখন ঘটে। এটি হঠাৎ বা দীর্ঘমেয়াদী উভয়ভাবে হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে পেট ফুলে যাওয়া, খারাপ হজম, ব্যথা এবং অস্বস্তি হতে পারে।

খাদ্যাভ্যাস কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে একটি। যারা পর্যাপ্ত পরিমাণে রেশাযুক্ত খাবার খায় না, যেমন ফল, সবজি এবং শস্যজাতীয় খাদ্য, তাদের অন্ত্রের চলাচল ধীর হয়ে যায়। প্রক্রিয়াজাত, ফ্যাট ও তেলযুক্ত খাবার বেশি খেলে হজম শক্তি কমে যায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

পানি বা তরল কম খাওয়াও কোষ্ঠকাঠিন্যের একটি বড় কারণ। পর্যাপ্ত পানি না পেলে অন্ত্রে খাদ্য শক্ত হয়ে যায় এবং সহজে বের হয় না। চা, কফি বা অতিরিক্ত সোডিয়ামযুক্ত পানীয় পান করলে দেহের জল কমে যায়, যা কোষ্ঠকাঠিন্যকে আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই পানি, লেবুর পানি, ফলের রস খেতে হবে।

শারীরিক কার্যক্রমের অভাবও কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য দায়ী। যারা দীর্ঘ সময় বসে থাকে বা হাটাহাটি কম করে, তাদের অন্ত্রের পেশি দুর্বল হয়ে যায়। নিয়মিত ব্যায়াম, হালকা দৌড়, যোগব্যায়াম বা পেট ও কোমরের মৃদু ব্যায়াম অন্ত্রের কার্যক্রম সচল রাখে এবং খাদ্য সহজে হজম করতে সাহায্য করে।

কিছু শারীরিক ও মানসিক কারণও কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করতে পারে। ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, হারমোনাল সমস্যা, মানসিক চাপ বা ডায়াবেটিস। এছাড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্ত্রের কার্যকারিতা ধীর হয়ে যায়। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস পর্যাপ্ত পানি, নিয়মিত ব্যায়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কোষ্ঠকাঠিন্যর লক্ষন গুলো কি কি

কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যাগুলো একটি মারাত্মক সমস্যা। এই সমস্যার কারণে অনেকের অনেক সময় অনেক বিপদের মধ্যে পড়তে হয়। কিন্তু এই সমস্যাগুলো পরিত্রাণের জন্য আমাদের আগে জানতে হবে কোষ্ঠকাঠিন্য লক্ষণগুলো কি কি।

কোষ্ঠকাঠিন্যর বোঝার যে লক্ষণ গুলো রয়েছে তা নিম্নরূপঃ

  •  মলত্যাগে অসুবিধা হওয়া।
  •  মল খুব শক্ত ও শুষ্ক হওয়া।
  •  মলত্যাগ খুব কম হওয়া।
  •  পেটে অব্যাহতভাবে অস্বস্তি বা বেধে থাকা।
  •  পেট ফোলা বা গ্যাস জমা হওয়া।
  •  পেটে ব্যথা বা ক্র্যাম্প হওয়া।
  •  মলত্যাগের সময় যন্ত্রণাদায়ক অনুভূতি।
  •  মলত্যাগের পরে অসম্পূর্ণ শূন্যতার অনুভূতি।
  •  প্রস্রাবের সময় চাপ অনুভব করা।
  •  উদরজটিলতা বা হজমে সমস্যা।
  •  মাথা ভারি বা ক্লান্তি অনুভূত হওয়া।
  •  খিঁচুনি বা পেশিতে অবসাদ।
  •  বিরক্তি বা মন খারাপ অনুভূত হওয়া।
  •  ভিটামিন বা পুষ্টি গ্রহণে সমস্যা।
  •  দীর্ঘ সময় ধরে সমস্যার পুনরাবৃত্তি।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার প্রাকৃতিক চিকিৎসা

কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ কিন্তু অস্বস্তিকর সমস্যা, যা প্রায়শই অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অপর্যাপ্ত জলপান, মানসিক চাপ এবং শারীরিক কার্যকলাপের অভাবের কারণে ঘটে। এটি দীর্ঘস্থায়ী হলে অন্ত্রের স্বাভাবিক হজম শক্তি কমে যায়। প্রাকৃতিক চিকিৎসা ব্যবহার করে এই সমস্যা সহজেই নিয়ন্ত্রণ হয়।

প্রাকৃতিক চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা। প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি বা তরল গ্রহণ করা উচিত, কারণ জল অন্ত্রকে মসৃণ রাখে এবং পায়খানা সহজে নিষ্কাশন করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, গরম পানি বা হালকা লেবুর পানি পান করলে হজম কার্যকর করা যায়।

খাদ্যাভ্যাসও কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাজা ফল, শাক-সবজি এবং বিশেষ করে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যেমন আপেল, নাশপাতি, আঙ্গুর, গাজর, লাউ ইত্যাদি অন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। ওটস, বাদাম এবং দই নিয়মিত খাওয়াও অন্ত্রের গতি বাড়াতে সাহায্য করে।

শারীরিক ব্যায়ামও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত হাঁটা, যোগব্যায়াম, হালকা দৌড় বা স্ট্রেচিং অন্ত্রের কার্যক্ষমতা উন্নত করে। বিশেষ করে পেটের পেশি শক্ত রাখা এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করলে অন্ত্র স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে থাকে। এছাড়াও মানসিক চাপ কমে।

প্রাকৃতিক চিকিৎসায় কিছু ঘরোয়া উপায়ও কার্যকর। লেবুর রস, আখরোটের তেল বা অলিভ অয়েল অন্ত্রের গতি স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে। নিয়মিত এই অভ্যাসগুলো অনুসরণ করলে কোষ্ঠকাঠিন্য অনেকটাই কমানো সম্ভব হয় এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।

আরো পড়ুনঃ প্রতিদিন কালোজিরা খেলে কি ক্ষতি হয়, সঠিক তথ্য জানুন।

কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করার কার্যকর উপায়

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে যে ঘরোয়া উপায়গুলো তার মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করার উপায় বেশ কয়েকটি রয়েছে। কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা থেকে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের নিরাময় উপায় গুলো জানতে হবে তবে আমরা এটি থেকে বেঁচে থাকবো।

কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করার যে উপায়গুলো রয়েছে তা নিম্নরূপঃ

  •  পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন, দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস।
  •  ফল এবং সবজি বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত।
  •  সঠিকভাবে চর্বি ও আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন।
  •  রুটি, চিঁড়া ও ওটমিলের মতো পূর্ণ শস্য বেশি খান।
  •  প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  •  হাঁটা বা হালকা দৌড় আপনার হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে।
  •  ডায়েটরির ফাইবার যুক্ত খাবার বেশি খান।
  •  নিয়মিত সময়ে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন।
  •  দুধ এবং দই হজমে সহায়ক।
  •  কাঁচা আমলকি বা লেবু যুক্ত পানীয় হজম ভালো করে।
  •  প্রচুর জলযুক্ত ফল যেমন তরমুজ, কমলা খাওয়া উচিত।
  •  কাজু, বাদাম ও সিমের মতো শুকনো ফল খান।
  •  চা বা কফি কম পান করুন, কারণ অতিরিক্ত ক্যাফেইন কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়ায়।
  •  হঠাৎ ভলিউমের পরিবর্তন না করে ধীরে ধীরে ফাইবার বৃদ্ধি করুন।
  •  প্রাকৃতিক ল্যাকটিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার যেমন দই খান।
  •  দীর্ঘক্ষণ ধরে হজমের জন্য অপেক্ষা না করে সময়মতো টয়লেট ব্যবহার করুন।
  •  চাপ ও স্ট্রেস কমানোও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে সহায়ক।
  •  প্রয়োজনে হালকা ল্যাক্সেটিভ ব্যবহার করতে পারেন, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

দ্রুত কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় 

কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ কিন্তু কষ্টকর সমস্যা, যা প্রায় সকল বয়সের মানুষের ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে। এটি মূলত অন্ত্রের ধীর গতির কারণে হয়, যার ফলে খাবার দীর্ঘ সময় ধরে অন্ত্রে থাকে এবং পায়খানার সমস্যা সৃষ্টি করে। দ্রুত মুক্তি পেতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা।

খাদ্যাভ্যাসের গুরুত্বও অপরিসীম। আঁশযুক্ত খাবার, যেমন শাক-সবজি, ফল, ওটমিল এবং পূর্ণ শস্য অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে এবং হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে। বিশেষ করে আপেল, পেয়ারা, বেরি, গাজর এবং ডুমুর খেলে দ্রুত কোষ্ঠকাঠিন্য কমে।

শারীরিক কার্যক্রম দ্রুত হজমে সাহায্য করে। নিয়মিত হাঁটা, দৌড়ানো, যোগব্যায়াম বা হালকা ব্যায়াম অন্ত্রের মাংসপেশিকে সক্রিয় রাখে। দীর্ঘক্ষণ নড়াচড়া না করলে অন্ত্র ধীরগতিতে কাজ করে, ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়ে। তাই প্রতিদিন অন্তত ২০–৩০ মিনিট হাঁটা বা ব্যায়াম করা উচিত।

প্রাকৃতিক ল্যাক্সেটিভ খাবারও খুবই কার্যকর। তরমুজ, আখরোট, আমলকি, ডুমুর এবং কাঁচা সবজি অন্ত্রের কার্যক্রমকে দ্রুত সক্রিয় করে। এছাড়া দই, কফার বা অন্যান্য প্রোবায়োটিক খাবার অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখে, যা হজমকে সহজ এবং কোষ্ঠকাঠিন্যকে দ্রুত কমায়।

যদি ঘরোয়া উপায়ে দ্রুত ফলাফল না পাওয়া যায়, তবে হালকা ল্যাক্সেটিভ ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এটি অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শে নেওয়া উচিত। নিয়মিত পানি পান, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম এবং প্রোবায়োটিক খাবারের সমন্বয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দ্রুত এবং স্থায়ীভাবে দূর করা সম্ভব।

কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে 

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কের উপরে আমরা জেনেছি। তবে কখন আমাদের ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এ ব্যাপারে ভালোভাবে বুঝতে হবে। কোষ্ঠকাঠিন্য অনেকেরই জীবনে মাঝে মাঝে দেখা দেয়। এটি সাধারণত খাদ্যাভ্যাস, পানি কম খাওয়া, কম শারীরিক কার্যক্রম বা মানসিক চাপের কারণে হয়ে থাকে। তবে যদি কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘ সময় ধরে থাকে বা ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমে সহজে ঠিক না হয়, তখন এটি একটি সতর্কবার্তা হতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্যের সময় যদি পায়খানার সময় প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়, রক্তপাত হয় বা মল রক্তমাখা হয়, তা স্বাভাবিক নয়। এই ধরনের লক্ষণ সাধারণ কোষ্ঠকাঠিন্যের চেয়ে অনেক বেশি গুরুতর। এটি অন্ত্রের ফাটল, পলিপ, বা অন্যান্য জটিলতার ইঙ্গিত দিতে পারে।

অনিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্য সহ যদি অপ্রত্যাশিত ওজন হ্রাস, দুর্বলতা, ক্লান্তি বা দীর্ঘস্থায়ী পেটের অস্বস্তি দেখা দেয়, তখন ঘরোয়া চিকিৎসা যথেষ্ট নয়। এমন লক্ষণ অন্ত্র বা হজম সংক্রান্ত সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে। ডাক্তারের পরীক্ষার মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত করা এবং যথাযথ চিকিৎসা শুরু করা গুরুত্বপূর্ণ।

ঘরোয়া পদ্ধতি যেমন পর্যাপ্ত পানি, আঁশযুক্ত খাবার, প্রোবায়োটিক খাবার বা হালকা ব্যায়াম ব্যবহার করার পরেও যদি কোন উন্নতি না হয়, তখন অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তি, গর্ভবতী মহিলা, অথবা ক্রনিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা দ্রুত চিকিৎসা নিলে জটিলতা সম্ভব।

সার্বিকভাবে, কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘস্থায়ী, অত্যন্ত ব্যথাজনক, রক্তসহ বা অন্যান্য অস্বাভাবিক লক্ষণযুক্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে সমস্যা দ্রুত সমাধান হয়। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সুষম খাদ্য এবং পর্যাপ্ত পানি পান কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ টক দই খাওয়ার উপকারিতা - ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঔষধ 

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানার সাথে সাথে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঔষধ এর নাম সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা, যা খাবারের অনিয়ম, পানি কম খাওয়া, শারীরিক কার্যক্রমের অভাব বা মানসিক চাপের কারণে হতে পারে। অনেক সময় ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করেও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় না। এমন ক্ষেত্রে ঔষধ ব্যবহার করা প্রয়োজন হতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্য-দূর-করার-ঘরোয়া-উপায়

সবচেয়ে সাধারণ ল্যাক্সেটিভ হলো সল্ট বা সোডিয়াম ভিত্তিক ল্যাক্সেটিভ, যা অন্ত্রের পানির পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং মল নরম করতে সাহায্য করে। এছাড়া ফাইবার ভিত্তিক ল্যাক্সেটিভ যেমন সিলিয়াম হ্যাস্কও ব্যবহৃত হয়। এগুলো নিয়মিত ব্যবহারে অন্ত্রের কার্যক্রম সহজ হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

হাইড্রোডাইনামিক বা সিন্থেটিক ল্যাক্সেটিভও পাওয়া যায়, যা অন্ত্রের পেশিকে উদ্দীপিত করে এবং দ্রুত কার্যকর হয়। এগুলো সাধারণত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়, কারণ দীর্ঘ সময় ব্যবহারে অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম কমে যেতে পারে। তাই ডাক্তারের নির্দেশ গ্রহণ করা উচিত।

প্রোবায়োটিক বা হজম সহায়ক ঔষধও কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। এগুলো অন্ত্রের স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়াকে বজায় রাখে এবং হজম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে। প্রোবায়োটিক ব্যবহার করলে ঘরোয়া পদ্ধতির সঙ্গে মিলিয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দ্রুত কমে।

সার্বিকভাবে, ঔষধ ব্যবহার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ক্ষেত্রে কার্যকর হতে পারে, তবে এটি সবসময় স্থায়ী সমাধান নয়। দীর্ঘমেয়াদী ফলাফলের জন্য সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত পানি, নিয়মিত ব্যায়াম এবং প্রোবায়োটিক খাবারের সঙ্গে ঔষধ ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার খাবার 

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে ঘরে তৈরি খাবার সম্পর্কেও আমাদের জানতে হবে। কারণ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য খাবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা, যা অনেক সময় হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে এবং পেটের অস্বস্তি সৃষ্টি করে। এর প্রধান কারণ হল খাদ্য থেকে পর্যাপ্ত আঁশ বা ফাইবারের অভাব। এটি দূর করতে সঠিক খাবারের নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। আঁশযুক্ত খাবার অন্ত্রের কার্যক্রমকে স্বাভাবিক রাখে, মল নরম করে।

ফলমূল কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর। আপেল, পেয়ারা, কমলা, বেরি, আমলকি এবং তরমুজের মতো ফল দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে হজম দ্রুত হয়। এই ফলগুলিতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ এবং জল থাকে, যা অন্ত্রের কার্যক্রমকে উন্নত করে।

সবজি ও শাক-সবজি কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে অপরিহার্য। বিশেষ করে গাজর, বাঁধাকপি, পালং শাক, শিম এবং বীটroot অন্ত্রের কার্যক্রমকে দ্রুত করে। হালকা সেদ্ধ বা কাঁচা সালাদ হিসেবে এই সবজি খেলে মল নরম হয় এবং হজম সহজ হয়।

পূর্ণ শস্য ও দানা জাতীয় খাবারও কোষ্ঠকাঠিন্যের বিরুদ্ধে কার্যকর। ওটমিল, বাদাম, বাদামের দানা, ব্রাউন রাইস, গোটা গমের রুটি অন্ত্রকে সক্রিয় রাখে এবং দীর্ঘ সময় পেট ভর্তি রাখে। এছাড়া দই, কফার বা প্রোবায়োটিক খাবার অন্ত্রের স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

পানি ও অন্যান্য তরল খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি, লেবু পানি, নারকেল জল বা হালকা স্যুপ খেলে হজম প্রক্রিয়া দ্রুত হয়। সার্বিকভাবে, সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত পানি এবং আঁশযুক্ত খাবারের সমন্বয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা সম্ভব।

আরো পড়ুনঃ সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবারের নাম গুলো জেনে নিন।

লেখক এর মতামত

প্রিয় পাঠক, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আপনারা আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত জেনেছেন। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে যে ঘরোয়া উপায় গুলো এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করার উপায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কি এগুলো আমরা জানলাম। আবার কোষ্ঠকাঠিন্যর প্রকাশ পাওয়ার লক্ষণগুলো এগুলো জানতে পেরেছি আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে।

কোষ্ঠকাঠিন্য মানব জীবনের একটি বড় সমস্যা এই সমসসা থেকে বেঁচে থাকার জন্য আমাদেরকে কি কি পথ অবলম্বন করতে হবে। এবং কি কি সতর্কতা অবলম্বন করলে সমাধান পাব এই সকল কিছু জানতে পারবেন। তাই নিয়মিত এরকম পোস্ট পেতে এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;

comment url