ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৫, আবেদন করার নিয়ম, লিংক

 

ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৫ সম্পর্কে আপনি যদি বিস্তারিত জানতে চান, তাহলে আজকের আর্টিকেল থেকে জানতে পারবেন। সাথে জানবেন, ইতালি ভিসা আবেদন করার নিয়ম ২০২৫ সম্পর্কে।

ইতালি-ওয়ার্ক-পারমিট-ভিসা

২০২৫ সালে ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে আলোচনায় এসেছে। এই ভিসার মাধ্যমে আপনি বৈধভাবে ইতালিতে যেতে পারবেন। এই পোস্টে আমরা জানাবো কিভাবে আবেদন করতে হয়, কি কি যোগ্যতা লাগবে ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। পোস্ট সূচিপত্রঃ

ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৫

ইটালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৫ সম্পর্কে বর্তমানে অনেকের জানার আগ্রহ রয়েছে। বর্তমানে অনেকে ইউরোপে উন্নত দেশে বৈধভাবে কাজ করার স্বপ্ন দেখে আসছেন আর এই স্বপ্নপূরণ অন্যতম সহ জনপ্রিয় উপায় হচ্ছে ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা। প্রতি বছরেই ইতালির সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে কাজ করার জন্য শ্রমিক নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে থাকেন।

তখন বাংলাদেশ থেকেও হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করার জন্য ইতালি যান। যার জন্য তাদেরকে ইতালির ওয়ার্ড পারমিট ভিসা করতে হয়।
ইতালি-ওয়ার্ক-পারমিট- ভিসা-২০২৫-বিস্তারিত-জানুন
পরিবারের আর্থিক অবস্থা অন্যদের জন্য স্থায়ী কিছু করার আসে অনেকে বিদেশে পাড়ি দিতে চান। কিন্তু ভিসা পাওয়ার সহজ নয় সেখানে ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৫ হতে পারে আপনার জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ। দেখা যায় যে প্রতিবছরই বাংলাদেশ থেকে এই ভিসার মাধ্যমে অনেক লোকজন কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন।

২০২৫ সালের জন্য নতুন আবেদন প্রক্রিয়া , সময়সীমা ও নিয়ম-নীতি ইতিমধ্যে জানা যাচ্ছে । আজকের পোস্টে জানুন কিভাবে আপনি নিজে আবেদন করবেন, কোন কোন কাগজপত্র লাগবে, বাংলাদেশ থেকে কিভাবে ইতালি ভিসা আবেদন করবেন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

ইতালি ভিসা আবেদন করার নিয়ম ২০২৫

ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৫ জন্য প্রথমে আপনাকে একটি নির্ভরযোগ্য স্পন্সর  খুঁজে নিতে হবে। স্পন্সর যদি ইতালির সরকারি অনুমোদিত কোটা অনুযায়ী শ্রমিক প্রয়োজনের জন্য আবেদন করে, তাহলে আপনার নামসহ ফরম সাবমিট করা হয়। এরপর স্পন্সর অনুমোদন পেলে, আপনি বাংলাদেশ থেকে ভিসার আবেদন করতে পারবেন।

আবেদন প্রক্রিয়া সংক্ষেপেঃ
  •  একটি বৈধ স্পন্সর খুঁজে পাওয়া
  •  স্পন্সরের মাধ্যমে ইতালির অভিবাসন দপ্তরে আবেদন
  •  আবেদন অনুমোদনের পর বাংলাদেশে অবস্থিত ইতালি দূতাবাসে যোগাযোগ
  •  ভিসার আবেদন ফর্ম পূরণ ও ডকুমেন্ট জমা
  •  ইন্টারভিউ বা বায়োমেট্রিক সাবমিশন
আবেদনকারীর অবশ্যই বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে যার মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস থাকতে হবে। এছাড়া কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে তা প্রমাণ করতে হবে। নির্ভরযোগ্য নিয়োগপত্র এবং স্পন্সরের পক্ষে পাওয়া কর্ম অনুমতি মূল ভিত্তি। এসব ডকুমেন্ট জমা দিয়ে আপনি দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করবেন।

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসঃ
  •  বৈধ পাসপোর্ট
  •  ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি
  •  স্পন্সরের পাঠানো Nulla Osta
  •  জব অফার লেটার
  •  মেডিকেল ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
  •  পূরণকৃত আবেদন ফরম ও ভিসা ফি

ইতালি ভিসা আবেদন কত তারিখ

ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৫ আবেদন কত তারিখ এখন জেনে নিন। প্রতি বছর ইতালির সরকার ডেক্রেটো ফ্লুসি নামক একটি কর্মী নিয়োগ কোটা ঘোষণা করে। ২০২৫ সালের ভিসার জন্য এই কোটার ঘোষণা আসার সম্ভাব্য সময় হলো জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে। সাধারণত, কোটার পরিমাণ এবং আবেদন শুরুর নির্দিষ্ট দিন সরকারি গেজেটের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

২০২৪ সালের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, সিজনাল ভিসার জন্য আবেদন শুরু হয়েছিল জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে এবং নন-সিজনাল ভিসার জন্য ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে। এগুলো নির্ভর করে কোন ক্যাটাগরির অধীনে আপনি আবেদন করছেন  যেমনঃ সিজনাল  ও নন-সিজনাল ।

প্রতিটি ক্যাটাগরির জন্য আলাদা আলাদা দিনে আবেদন ফর্ম জমা নেওয়া হয় এবং অনলাইনে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ফর্ম পূরণ করতে হয়।

ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন ফরম জমা দেওয়ার শেষ সময় সাধারণত কোটার ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। একবার কোটা পূরণ হয়ে গেলে নতুন আবেদন আর গ্রহণ করা হয় না। তাই যারা আবেদন করতে চান, তাদের কোটার ঘোষণা হতেই প্রস্তুতি রাখা ও দ্রুত আবেদন করা গুরুত্বপূর্ণ। কিছু ক্ষেত্রে ৩–৪ মাসের মধ্যে আবেদন গ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যায়।

২০২৫ সালের জন্য এখনো নির্দিষ্ট তারিখ প্রকাশ হয়নি, তবে সম্ভাবনা রয়েছে যে এটি ফেব্রুয়ারি–এপ্রিল ২০২৫ সময়ের মধ্যে সক্রিয় থাকবে। ইতালির অভিবাসন বিষয়ক অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা দূতাবাসের মাধ্যমে সর্বশেষ তথ্য জানানো হবে। তাই নিয়মিত সরকারিভাবে প্রকাশিত তথ্যে চোখ রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ।

ইতালি ভিসা আবেদন লিংক

বাংলাদেশ থেকে ইতালির ভিসা আবেদন করার জন্য ভিএফএস গ্লোবাল হলো দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান। ভিএফএস-এর মাধ্যমে আপনি শেনজেন পর্যটন কাজ, পড়াশোনা বা ফ্যামিলি ভিসার আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করতে হলে আপনাকে প্রথমে VFS Global-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ গিয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে হবে।

https://visa.vfsglobal.com/bgd/bn/ita/embassy-of-italy সাইটে গিয়ে ‘Apply for a visa’ অপশন সিলেক্ট করে আপনি ধাপে ধাপে আবেদন প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে পারবেন।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও সময়সূচি ঃ
  • আবেদনের আগে আপনার পাসপোর্ট
  • পাসপোর্ট সাইজ ছবি
  • ইনভিটেশন লেটার (যদি থাকে)
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট
  • ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্সসহ প্রযোজ্য কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে হবে।
সময়মতো অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করা জরুরি, কারণ ভিসার জন্য স্লট পাওয়া অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। অ্যাপয়েন্টমেন্টের দিন নির্ধারিত সেন্টারে গিয়ে বায়োমেট্রিকসহ কাগজপত্র জমা দিতে হয়। আবেদনের স্ট্যাটাস আপনি অনলাইনেই ট্র্যাক করতে পারবেন।

বাংলাদেশ থেকে কিভাবে ইতালি ভিসা করবেন

ইউরোপের উন্নত দেশগুলোর মধ্যে ইতালি অন্যতম একটি পছন্দের গন্তব্য, যেখানে বৈধভাবে কাজ করার সুযোগ অনেক বেশি। প্রতি বছর হাজারো বাংলাদেশি ইতালিতে কাজের সুযোগ খুঁজে পাড়ি জমাতে আগ্রহী হন। বিশেষ করে ইতালির সরকার যখন “ওয়ার্ক পারমিট ভিসা” কোটা ঘোষণা করে, তখন সেটি বাংলাদেশিদের জন্য হয়ে ওঠে একটি বড় সুযোগ।

তবে অনেকেই সঠিক নিয়ম-কানুন না জানার কারণে প্রতারণার শিকার হন কিংবা আবেদন প্রক্রিয়ায় পিছিয়ে পড়েন। তাই বাংলাদেশ থেকে কীভাবে একজন আবেদনকারী ইতালির ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন, কী কী কাগজপত্র লাগে, কোথায় ফর্ম জমা দিতে হয় এসব বিষয় নিয়ে এই লেখায় বিস্তারিতভাবে সহজ ভাষায় তুলে ধরা হলো।

নিয়োগপত্রঃ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ইতালির ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো একজন ইতালিয়ান স্পন্সর বা নিয়োগদাতার মাধ্যমে আবেদন করা। প্রথমে আপনার নামে একজন স্পন্সর ইতালির কোম্পানি, ফার্ম, কৃষি মালিক ইত্যাদি ইতালির অভিবাসন অফিসে Nulla Osta  চেয়ে আবেদন করবেন।

আবেদন করাঃ আবেদন অনুমোদন হলে সেই স্পন্সরের পক্ষ থেকে আপনি একটি অফিসিয়াল কাগজ পাবেন। এরপর আপনি বাংলাদেশে অবস্থিত ইতালির দূতাবাসে গিয়ে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আবেদন ফরম জমা দেওয়াঃ স্পন্সরের Nulla Osta পাওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে আপনাকে ইতালির দূতাবাসে গিয়ে নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করে আবেদন জমা দিতে হবে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ সাথে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট যেমনঃ পাসপোর্ট, ছবি, মেডিকেল সার্টিফিকেট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, ও স্পন্সরের কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

ইন্টারভিউ ও ভিসা পাওয়াঃ এছাড়াও দূতাবাসে বায়োমেট্রিক তথ্য ও ইন্টারভিউ দিতে হতে পারে। আবেদন গ্রহণ হলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভিসার ফলাফল জানিয়ে দেওয়া হয়।

নিচে দেখে নিন কি কি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রয়োজন হবেঃ
  • বৈধ পাসপোর্ট কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদ
  • স্পন্সরের Nulla Osta ও চাকরির অফার লেটার
  • ছবি পাসপোর্ট সাইজ ২ কপি
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
  • পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফরম
  • আবেদন ফি

ইতালি টুরিস্ট ভিসা

বাংলাদেশ থেকে ইতালি টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে প্রথমে আপনাকে ভিসার আবেদন ফরম পূরণ করে ইতালির ভিএফএস VFS Global বা দূতাবাসে জমা দিতে হবে। এই ভিসা মূলত Schengen ভিসা টাইপ-C, যার মাধ্যমে আপনি ইতালি সহ অন্যান্য শেনজেন দেশের মধ্যে নির্দিষ্ট সময় সাধারণত ১৫-৯০ দিন ভ্রমণ করতে পারবেন।

আবেদনকারীর আর্থিক স্থিতিশীলতা, আগের ভ্রমণ ইতিহাস, উদ্দেশ্য স্পষ্টতা এবং দেশে ফেরার প্রমাণ খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়ার পর, দূতাবাসে বা VFS অফিসে গিয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়। এরপর ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং সাধারণত ১৫–৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

ইতালি টুরিস্ট ভিসার জন্য কিছু নির্দিষ্ট কাগজপত্র জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। এর মধ্যে রয়েছে-
  • বৈধ পাসপোর্ট কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদ
  • পূরণকৃত শেনজেন ভিসা ফর্ম
  • ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট সর্বশেষ ৬ মাস, যথেষ্ট ব্যালেন্সসহ
  • ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স ৩০,০০০ ইউরো কভারেজ সহ
  • হোটেল বুকিং, রিটার্ন টিকিট
  • চাকরি/ব্যবসার প্রমাণপত্র
  • এনআইডি ও জন্মসনদের কপি
  • ভিসা ফি প্রায় ৮০ ইউরো
একজন পর্যটক হিসেবে আবেদন করতে হলে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে আপনি শুধু ঘুরতে যাচ্ছেন এবং নির্ধারিত সময় শেষে দেশে ফিরবেন। ভুয়া ডকুমেন্ট, ভুল তথ্য বা দুর্বল আর্থিক প্রোফাইলের কারণে আবেদন বাতিল হতে পারে।

অনলাইনে ভিসা আবেদন ফরম

আপনারা যারা ইতালি যাবার জন্য ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৫ করতে চাচ্ছেন তারা এখন ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে স্মার্টফোনের দ্বারা অথবা ল্যাপটপের দ্বারা অনলাইন ভিসা আবেদন ফরম পূরণ করতে পারবেন। কষ্ট করে আর বাইরে গিয়ে আবেদন ফরম করা লাগে না।

ইতালির ভিসার জন্য অনলাইন আবেদন ফরম VFS Global অথবা Italia Visa Portal ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পাওয়া যায়, যা নির্ভর করে আপনি কোন ভিসা ক্যাটাগরিতে আবেদন করছেন। সাধারণত বাংলাদেশ থেকে টুরিস্ট, স্টুডেন্ট বা ওয়ার্ক ভিসার আবেদন VFS-এর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। 

অনলাইন ফরম পূরণের সময় আপনাকে ব্যক্তিগত তথ্য, পাসপোর্ট তথ্য, ভ্রমণের উদ্দেশ্য, থাকার ঠিকানা ও আর্থিক তথ্য সঠিকভাবে দিতে হবে।

ফরম পূরণের সময় কিছু তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমনঃ
  • ভ্রমণের উদ্দেশ্য
  • যাত্রার নির্দিষ্ট তারিখ
  • কতদিন থাকবেন
  • কোন শহরে থাকবেন
  • খরচ কে বহন করবে
  • আগের যেকোনো শেনগেন ভিসার ইতিহাস
  • ফরম পূরণের পর আপনাকে একটি PDF কপি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করতে হবে যা VFS বা দূতাবাসে জমা দিতে হবে।
অনলাইন ফরম পূরণ করার সময় অবশ্যই সব তথ্য ইংরেজিতে দিন এবং পাসপোর্ট অনুযায়ী হুবহু মিলিয়ে দিন। ভুল তথ্য বা অসম্পূর্ণ ফরম জমা দিলে আবেদন বাতিল হতে পারে। ফরম জমা দেওয়ার আগে বারবার রিভিউ করে নিন যেন বানান বা তারিখে কোনো ভুল না থাকে। এছাড়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে না পারলে আবেদন গ্রহণ করা হবে না।

অনলাইন ফরম পূরণের জন্য যা যা লাগবে
  • পাসপোর্ট তথ্য
  • ট্রাভেল ডেট
  • হোটেল বুকিং বা ইনভাইটেশন লেটার
  • বিমা তথ্য
  • আর্থিক তথ্য ব্যাংক ব্যালেন্স
  • চাকরি/ব্যবসা সংক্রান্ত তথ্য 
তাহলে বলা যায় যে কোন ঝামেলা ছাড়াই আপনি এখন ঘরে বসেই সবকিছু তথ্য দিয়ে ইতালি অনলাইন ভিসা খুব সহজেই করতে পারবেন।

ইতালি ভিসা করতে কি কি যোগ্যতা লাগে

ইতালির যেকোনো ভিসা পেতে হলে আপনাকে কিছু মৌলিক শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রথমত, আপনার অবশ্যই একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে, যার মেয়াদ ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অন্তত ৩ মাস থাকতে হবে।

আবেদনকারীর বয়সসীমা সাধারণত ১৮ বছর বা তার বেশি হতে হবে স্টুডেন্ট ভিসা হলে ভিন্ন হতে পারে। ভিসার ধরন অনুযায়ী অবশ্যই সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থাকতে হবে। যেমন ট্যুরিজম, কাজ বা পড়াশোনা।

সবার জন্য সাধারণ যোগ্যতাঃ
  • বৈধ পাসপোর্ট মেয়াদসহ
  • সুনির্দিষ্ট ভ্রমণ উদ্দেশ্য
  • ভালো আর্থিক সামর্থ্য
  • সচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য ভ্রমণ ইতিহাস
  • কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড না থাকা
  • মেডিকেল/ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স
  • নির্দিষ্ট সময় পর নিজ দেশে ফেরার নিশ্চয়তা
 টুরিস্ট ভিসার জন্য যোগ্যতাঃ
  • পর্যাপ্ত ব্যাংক ব্যালেন্স সাধারণত মিনিমাম ২-৩ লাখ টাকা
  • হোটেল বুকিং ও রিটার্ন টিকিট
  • চাকরি বা ব্যবসার প্রমাণ NOC, ট্রেড লাইসেন্স, অফিস আইডি ইত্যাদি
  • পরিবারের সাথে বন্ধন প্রমাণ যাতে ফেরার সম্ভাবনা বেশি থাকে
ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য যোগ্যতা যোগ্যতাঃ
  • ইতালিতে বৈধ স্পন্সরের মাধ্যমে আবেদন
  • কাজের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সার্টিফিকেট/প্রমাণপত্র
  • মেডিকেল ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
  • স্পন্সরের পাঠানো Nulla Osta বা Job Offer
 স্টুডেন্ট ভিসার জন্য যোগ্যতাঃ
  • ইতালির বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিতকরণ চিঠি 
  • কোর্স ফি জমার রসিদ
  • IELTS/Language প্রমাণ
  • পর্যাপ্ত ফান্ড বাড়িভাড়া + খরচ বাবদ মিনিমাম ৭-১০ লাখ টাকা

ইতালি ভিসা পেতে আবেদন ফি কত

ইতালি ভিসার আবেদন ফি নির্ধারিত হয় আপনার ভিসার ধরণ ও বয়স অনুযায়ী। সাধারণত এটি ইউরো তে হিসাব করা হয় এবং বাংলাদেশি টাকায় রূপান্তরিত হয়ে ভিএফএস বা দূতাবাসে জমা দিতে হয়।

নিচে সবচেয়ে প্রচলিত ভিসাগুলোর ফি দেওয়া হলোঃ

২০২৫ অনুযায়ী সম্ভাব্য  আবেদন ফি-

১. টুরিস্ট ভিসাঃ বয়স ১২+

ফিঃ 80 ইউরো

আনুমানিক টাকায়ঃ প্রায় ১০,০০০ টাকা


টুরিস্ট ভিসা – শিশু (৬–১২ বছর)
 
ফিঃ40 ইউরো

আনুমানিক টাকায়: প্রায় ৫,০০০ টাকা


টুরিস্ট ভিসা – শিশু (০–৬ বছর)

ফি: ফ্রি (০ টাকা)


২. ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

ফিঃ116 ইউরো

আনুমানিক টাকায়ঃ প্রায় ১৩,৫০০ টাকা

৩. স্টুডেন্ট   ভিসা

ফিঃ 50–80 ইউরো

আনুমানিক টাকায়: প্রায় ৬,০০০–১০,০০০ টাকা

 VFS সার্ভিস চার্জ সব ভিসার জন্য

 ফিঃ 20–25 ইউরো (প্রায় ২,৫০০–৩,০০০ টাকা)
 
ভিসা ফি ছাড়াও আরও কিছু অতিরিক্ত খরচ থাকে, বিশেষ করে আপনি যদি VFS Global-এর মাধ্যমে আবেদন করেন, তাহলে সেক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। সাধারণত VFS সার্ভিস চার্জ হয়ে থাকে প্রায় ২০ থেকে ২৫ ইউরো (প্রায় ২,৫০০–৩,০০০ টাকা)। এছাড়া, SMS আপডেট, কুরিয়ার, ফটোকপি, ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স ইত্যাদি ব্যয়ে আলাদা খরচ হতে পারে।

ফি কখনোই ফেরতযোগ্য নয়, ভিসা না পেলেও ফি ফেরত পাওয়া যায় না।সর্বশেষ ফি ও কারেন্সি রেটের আপডেট VFS বা দূতাবাসের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া উচিত।আবেদন ফি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ব্যাংক বা অনলাইন মাধ্যমে জমা দিতে হয়, যার রসিদ প্রমাণস্বরূপ জমা দিতে হবে

ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে

বাংলাদেশ থেকে ইতালির টুরিস্ট বা স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করলে সাধারণত ১৫ থেকে ৩০ কার্যদিবস সময় লাগে। তবে এটি নির্ভর করে কতটা ডিমান্ড, দূতাবাসের চাপ, এবং ডকুমেন্ট ঠিকভাবে জমা দেওয়া হয়েছে কি না তার ওপর।অনেক সময় সিজনে গ্রীষ্ম বা ছুটির সময় ভিসা আবেদন বেশি হলে প্রক্রিয়ায় ৪০ দিন বা তারও বেশি সময় লাগতে পারে।

স্টুডেন্ট ভিসা হলে ভর্তি চিঠি ও অন্যান্য প্রক্রিয়া যাচাই করে দূতাবাস সিদ্ধান্ত নেয়। কোনো অতিরিক্ত যাচাই না থাকলে সাধারণত ৩ সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল পাওয়া যায়।

ভিসা-পেতে-কতদিন-সময়-লাগে
ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে সবচেয়ে বেশি সময় লাগে, কারণ এতে দুই ধাপে প্রক্রিয়া হয়। প্রথম ধাপ হলো ইতালির স্পন্সর কর্তৃক Nulla Osta  নেওয়া। এই অনুমোদন পেতে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ বা তার বেশি সময় লাগতে পারে। এরপর বাংলাদেশে দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করলে, দূতাবাস সাধারণত ৩০–৬০ দিন সময় নেয় যাচাই-বাছাই ও ইন্টারভিউসহ সবকিছু দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে।

সব মিলিয়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে ২–৩ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

ভিসার ধরন  ও সময়সীমা ঃ
  • টুরিস্ট ভিসা ১৫–৩০ কার্যদিবস
  • স্টুডেন্ট ভিসা১৫–২৫ কার্যদিবস
  • ওয়ার্ক পারমিট৬০–৯০ দিন
সব সময় দূতাবাস ও ভিএফএস অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভিসা প্রসেসিং টাইম চেক করুন। যাত্রার ১–২ মাস আগে আবেদন করাই উত্তম। অতিরিক্ত ডকুমেন্ট চাওয়া বা ইন্টারভিউ হলে সময় আরও বাড়তে পারে।

FAQ

নিচে ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৫ সম্পর্কিত সবচেয়ে সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ  FAQ  দেওয়া হলোঃ যেগুলো ভিসা আবেদনকারীদের প্রায়ই জানা দরকার হয়ঃ

প্রশ্নঃ বাংলাদেশ থেকে ইতালির কোন ধরণের ভিসা সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়?
উত্তরঃ সাধারণত ওয়ার্ক পারমিট, টুরিস্ট এবং স্টুডেন্ট ভিসা সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সাধারণভাবে অনুমোদিত হয়।

প্রশ্নঃ ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য স্পন্সর লাগবে কি?
উত্তরঃ হ্যাঁ, অবশ্যই। কোনো ইতালিয়ান কোম্পানি বা নিয়োগদাতা থেকে স্পন্সর ছাড়া এই ভিসা সম্ভব নয়।

প্রশ্নঃ টুরিস্ট ভিসার জন্য কি ব্যাংক ব্যালেন্স দেখাতে হয়?
উত্তরঃ হ্যাঁ। সাধারণত মিনিমাম ২–৩ লাখ টাকা থাকতে হয়, তবে ভ্রমণের সময়কাল ও খরচ অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে।

প্রশ্নঃ ভিসা রিজেক্ট হলে কি ফি ফেরত পাওয়া যায়?
উত্তরঃ না, একবার জমা দেওয়া ফি ফেরতযোগ্য নয়, ভিসা না পেলেও।

প্রশ্নঃ ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে?
উত্তরঃ টুরিস্ট ও স্টুডেন্ট ভিসা – ১৫–৩০ দিন, ওয়ার্ক পারমিট – ৬০–৯০ দিন পর্যন্ত লাগতে পারে।

প্রশ্নঃ কী কারণে ভিসা রিজেক্ট হয় বেশি?
উত্তরঃ ভুল বা ভুয়া ডকুমেন্ট, আর্থিক দুর্বলতা, স্পন্সর অযোগ্যতা, ভ্রমণ উদ্দেশ্য অস্পষ্ট হওয়া ইত্যাদি কারণে।

প্রশ্নঃ ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া কি কেউ ইতালিতে গিয়ে কাজ করতে পারে?
উত্তরঃনা, এটি অবৈধ এবং ধরা পড়লে ডিপোর্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

প্রশ্নঃ ভিসার জন্য পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও মেডিকেল রিপোর্ট লাগবে কি?
উত্তরঃ ওয়ার্ক পারমিট ও স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে এগুলো প্রয়োজন হতে পারে, টুরিস্ট ভিসায় সাধারণত বাধ্যতামূলক নয়।

প্রশ্নঃ ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স বাধ্যতামূলক কি?
উত্তরঃ হ্যাঁ, শেনজেন টুরিস্ট ও স্টুডেন্ট ভিসার জন্য কমপক্ষে ৩০,০০০ ইউরো কভারেজসহ ইন্স্যুরেন্স বাধ্যতামূলক।

উপসংহার

প্রিয় পাঠক, ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৫ সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ইতালির মতো উন্নত দেশে বৈধভাবে কাজ, পড়াশোনা বা ভ্রমণের সুযোগ পাওয়া অনেকের স্বপ্ন। তবে সেই স্বপ্নপূরণ করতে হলে প্রয়োজন সঠিক তথ্য, প্রস্তুতি এবং ধৈর্য। যেকোনো ধরনের ভিসা হোক ওয়ার্ক পারমিট, টুরিস্ট বা স্টুডেন্ট। প্রতিটি ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও যোগ্যতা রয়েছে, যেগুলো মানতে হবে।

বাংলাদেশ থেকে কেউ যদি সত্যিই ইতালি যেতে চান, তাহলে নিজে যাচাই করে আবেদন করা, ভুয়া দালাল বা প্রতারণা থেকে দূরে থাকা এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিকভাবে প্রস্তুত রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সময়মতো আবেদন ও তথ্যগত স্বচ্ছতাই আপনার ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়।

বর্তমানে ইতালি ভিসা নিয়ে অনেক ভুয়া তথ্য, এজেন্টের প্রতারণা ও ভুলপ্রচারণা চালু আছে। অনেকেই না বুঝে ভুয়া কাগজপত্র জমা দেন বা অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে প্রতারিত হন। মনে রাখতে হবে, সঠিকভাবে আবেদন করা ও নিয়ম মেনে চললেই আপনি নিরাপদে ইতালিতে পাড়ি দিতে পারবেন।

তাই, এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সরকারি ওয়েবসাইট, VFS Global বা দূতাবাসের মাধ্যমে যাচাই করে নিন। নিজে সচেতন হোন এবং অন্যদেরও সতর্ক করুন। প্রয়োজনে অভিজ্ঞ কারও সহায়তা নিন, তবে নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিন। সঠিক পথে এগোলে ভিসা পাওয়া কঠিন নয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;

comment url