ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকা - ইউরোপের নন সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকা ২০২৫

 ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকা ও ইউরোপের নন সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকা ২০২৫ (সর্বশেষ আপডেট) দেখে নিন আজকের আর্টিকেল থেকে।

ইউরোপের-সেনজেনভুক্ত-দেশের-তালিকা

১৯৮৫ সালে সেনজেন চুক্তি হওয়ার পর বর্তমানে সেনজেন অঞ্চলে ২৯টি দেশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।সেনজেনভুক্ত দেশ সমূহ ইউরোপের অভ্যন্তরে পর্যটন, বাণিজ্য এবং সামাজিক মেলবন্ধনকে সহজতর করেছে। পোস্ট সূচিপত্রঃ

ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকা 

ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো একটি ভিসামুক্ত অঞ্চল, যেখানে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো পারস্পরিক সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ প্রায় উঠিয়ে দিয়েছে। এর ফলে এই অঞ্চলের ইউরোপীয় দেশগুলোর নাগরিকগণ অবাধ যাতায়াত, পণ্য পরিবহন ও পারস্পরিক সহযোগিতার সুবিধা ভোগ করে।

সেনজেন আওতাধীন যে কোন এক দেশের ভিসা দিয়ে অন্য দেশে ভিসা ছাড়াই ঝামেলা হীন ভাবে ভ্রমণ করা যায়। অর্থাৎ যে কোন প্রয়োজনে একটি দেশের ভিসা পেলে অন্য দেশে সহজে যাওয়া যায়। বিদেশি কোন নাগরিক সেনজেনভুক্ত একটি দেশের ভিসা পেলে সেও এই সুবিধা ভোগ করতে পারে।

বর্তমানে সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকায় ইউরোপের ২৯টি দেশ রয়েছে। আপনারা যারা ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকা সম্পর্কে জানতে চান তাদের জন্য তালিকা সহ সেনজেনভুক্ত দেশগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি নিচে দেওয়া হলোঃ

নিচে দেখে নিন সেনজেনভুক্ত ইউরোপীয় দেশের তালিকা (২০২৫ অনুযায়ী):
  1. অস্ট্রিয়া
  2. বেলজিয়াম
  3. চেক প্রজাতন্ত্র
  4. ডেনমার্ক
  5. এস্তোনিয়া
  6. ফিনল্যান্ড
  7. ফ্রান্স
  8. জার্মানি
  9. গ্রীস
  10. হাঙ্গেরি
  11. ইতালি
  12. লাটভিয়া
  13. লিশটেন্সটাইন
  14. লিথুয়ানিয়া
  15. লুক্সেমবার্গ
  16. মাল্টা
  17. নেদারল্যান্ড
  18. নরওয়ে
  19. পোল্যান্ড
  20. পর্তুগাল
  21. স্লোভে কিয়া
  22. স্লোগানিয়া
  23. স্পেন
  24. সুইডেন
  25. সুইজারল্যান্ড
  26. আইসল্যান্ড
  27. বুলগেরিয়া
  28. ক্রোয়েশিয়া
  29. রোমানিয়া
  • অস্ট্রিয়াঃ অস্ট্রিয়া মধ্য ইউরোপের স্থল বেষ্টিত একটি দেশ। এই দেশটি পূর্ব আল্পস পর্বতমালায় অবস্থিত। অস্ট্রিয়ার আনুষ্ঠানিক নাম অস্ট্রিয়া প্রজাতন্ত্র। দেশটির অফিসিয়াল ভাবে জার্মান ভাষা প্রচলিত। অস্ট্রিয়ার রাজধানীর নাম ভিয়েনা। দেশটিতে অভিন্ন ইউরো মুদ্রা প্রচলিত।

  • বেলজিয়ামঃ বেলজিয়াম উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের একটি ছোট ও ঘনবসতিপূর্ণ রাষ্ট্র। দেশটির রাজধানীর নাম ব্রাসেলস। দেশটিতে বর্তমানে তিনটি অফিসিয়াল ভাষা রয়েছে, জার্মান, ডাচ ও ফ্রেঞ্চ। বর্তমানে দেশটিতে ইউরো মুদ্রা প্রচলিত।

  • চেক প্রজাতন্ত্রঃ মধ্য ইউরোপের একটি উন্নত অগ্রসরশীল দেশ হলো চেক প্রজাতন্ত্র। দেশটিতে বর্তমানে একক সংসদীয় গণতন্ত্র বহাল রয়েছে। ইউরোপের অন্যতম শিক্ষা সামাজিকভাবে উন্নত একটি দেশ চেক প্রজাতন্ত্র। দেশটি রাজধানীর নাম প্রেগ। বর্তমানে দেশটিতে কোরুনা( চেক ক্রাউন) মুদ্রা প্রচলিত। দেশটির অফিসিয়াল ভাষা চেক।

  • ডেনমার্কঃ সেনজেনভুক্ত উত্তর পশ্চিম ইউরোপের আরেকটি ছোট সুন্দর ধনী রাষ্ট্র ডেনমার্ক। দেশটি রাজধানীর নাম কোপেনহেগ। বর্তমানে দেশটিতে ড্যানিশ মুদ্রা প্রচলিত।

  • এস্তোনিয়াঃ সেনজেনভুক্ত উত্তর ইউরোপের বালটিক সাগরের তীরে অবস্থিত ছোট রাষ্ট্র এস্তোনিয়া। অফিসিয়ালি দেশটির নাম এস্তোনিয়া প্রজাতন্ত্র। দেশটির রাজধানীর নাম তালিন। দেশটির সরকারি ভাষা এস্তনিও এবং মুদ্রার নাম ইউরো।

  • ফিনল্যান্ডঃ সেনজেন ভুক্ত উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের বালটিক সাগরের উপকূলে অবস্থিত দেশ ফিনল্যান্ড। দেশটির রাজধানীর নাম হেলসিংকি। সরকারিভাবে ফিনিশ এবং সুইডিশ ভাষা প্রচলিত। মুদ্রার নাম ইউরো।

  • ফ্রান্সঃ সেনজেনভুক্ত পশ্চিম ইউরোপের একটি উন্নত দেশ ফ্রান্স। দেশটির রাজধানীর নাম প্যারিস। ফ্রান্স ফ্যাশন, সংস্কৃতির, খাবার এর জন্য বিখ্যাত। এখানে বিশ্ব বিখ্যাত লুভের মিউজিয়াম এবং আইফেল টাওয়ার অবস্থিত। দেশটির মুদ্রার নাম ইউরো। সরকারি ভাবে ফ্রেন্স ভাষা প্রচলিত।
  • জার্মানিঃ সেনজেন ভুক্ত মধ্য ইউরোপের উন্নত দেশ জার্মানি। দেশটি বালটিক সাগর ও উত্তর সাগরের মধ্যবর্তীতে অবস্থিত। দেশটির দক্ষিণে আল্পস পর্বতমালা। রাজধানীর নাম বার্লিন। সরকারিভাবে জার্মান ভাষা প্রচলিত এবং মুদ্রার নাম ইউরো।

  • গ্রিসঃ ইউরোপের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের আরেকটি সেনজেনভুক্ত ধনী দেশ গ্রিস। দেশটির রাজধানীর নাম এথেন্স এবং সরকারিভাবে গ্রিক ভাষা প্রচলিত। মুদ্রার নাম ইউরো। দেশটির সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণীয় কেন্দ্রবিন্দু।

  • হাঙ্গেরিঃ মধ্য ইউরুপে অবস্থিত সেনজেনভুক্ত আরেকটি ধনী এবং উচ্চ আয়ের দেশ হাঙ্গেরি। দেশটির রাজধানীর নাম বুদাপেস্ট। সরকারিভাবে হাঙ্গেরিয়ান ভাষা প্রচলিত। মুদ্রার নাম ফোরিন্ট। দেশটি ইউরোপের সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

  • ইতালিঃ পশ্চিম ইউরোপের সেনজেনভুক্ত আরেকটি প্রাচীন এবং পশ্চিমা সংস্কৃতি এবং খাবারের জন্য বিখ্যাত দেশ ইতালি। দেশটি রাজধানীর নাম রোম। বিশ্ব বিখ্যাত দুটি শহরের নাম ভেনিস এবং মিলন, যে দুটি শহর ক্যানেল এবং ফ্যাশন এর জন্য সমৃদ্ধ। দেশটিতে অভিন্ন মুদ্রা ইউরো প্রচলিত।

  • লাটভিয়াঃ সেনজেনভুক্ত বালটিক সাগরের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত এবং লিথুনিয়া ও এস্তোনিয়ার মধ্যবর্তী ইউরোপের ছোট দেশ লাটভিয়া। দেশটি রাজধানীর নাম রিগা। সরকারিভাবে লাটবিয়ান ভাষা প্রচলিত। মুদ্রার নাম ইউরো।

  • লিচেনস্টেইনঃ ইউরোপের একটি ছোট দেশ লিশটেন্সটাইন। দেশটি সুইজারল্যান্ড এবং অস্ট্রিয়ার মধ্যবর্তী একটি দেশ। ইউরোপের চতুর্থ ক্ষুদ্র এই দেশটির রাজধানীর নাম ভাদুজ। বর্তমানে দেশটিতে জার্মান এবং সুই্জ ভাষা প্রচলিত।

  • লিথুয়ানিয়াঃ ইউরোপের সেনজেনভুক্ত ২৯ টি দেশের মধ্যে রয়েছে লিথুয়ানিয়া। দেশটি রাজধানীর নাম ভিলনিয়াস। দেশটি বালটিক সাগরের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। অবস্থানের দিক থেকে দেশটি সুইডেনের বিপরীত দিকে অবস্থিত। লিথুয়ানিয়ন হল দেশটির সরকারি ভাষা।

  • লুক্সেমবার্গঃ পশ্চিম ইউরোপের সেনজেনভুক্ত আরেকটি ছোট দেশ লুক্সেমবার্গ। দেশটি চারিদিকে স্থল থল দ্বারা বেষ্টিত। দেশটি ছোট হলেও মাথাপিছু আয় এর দিক থেকে ইউরোপের উচ্চ আয়ের দেশ এটি। দেশটি রাজধানীর নাম লুক্সেমবার্গ। জার্মান, ফ্রেঞ্চ এবং লুক্সেমবর্গিস  হল অফিসিয়াল ভাষা।

  • মালটাঃ তিনটি দ্বীপ নিয়ে গঠিত ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশ মাল্টা। দেশটি ভূমধ্যসাগরের কেন্দ্রে অবস্থিত এবং সিসিলি ও উত্তর আফ্রিকার মধ্যবর্তী দেশ। দেশটির রাজধানীর নাম ভেলেটা। দেশটি বৈদেশিক বাণিজ্য, পর্যটন এবং শিপিং এর উপর নির্ভরশীল এবং জীবন যাত্রার মান অনেক উন্নত।

  • নেদারল্যান্ডসঃ ইউরোপের উত্তর-পশ্চিমে সেনজেনভুক্ত আরেকটি ধনী দেশ নেদারল্যান্ড।দেশটির রাজধানীর নাম আমস্টারড্যাম। দেশটির টিউলিপ বাগান, সাইক্লিং রুট, উইন্ড মিল, ভ্যানগগ মিউজিয়াম, এনা ফ্র্যাঙ্ক এর দেশ হিসেবে বিখ্যাত। সরকারিভাবে দেশটিতে ডাচ ভাষা প্রচলিত এবং মুদ্রার নাম ইউরো।

  • নরওয়েঃ উত্তর ইউরোপের সেনজেন ভুক্ত নর্ডীও দেশ নরওয়ে। দেশটির সরকারি নাম নরওয়ে রাজ্য এবং রাজধানী অসলো। পৃথিবীর সর্ব উত্তরের দেশ নরওয়ে, এটি এমন একটি দেশ যেখানে সূর্য অস্ত যায় না, এজন্য দেশটি নিশিথ সূর্যের দেশ নামে পরিচিত।

  • পোল্যান্ডঃ ইউরোপের মধ্যে অবস্থিত সেজেনভুক্ত আরেকটি ঐতিহাসিক দেশ পোল্যান্ড। সরকারিভাবে দেশটির পোল্যান্ড প্রজাতন্ত্র নামে পরিচিত। দেশটির রাজধানীর নাম ওয়ারস। দেশটির অফিসিয়াল ভাষা পোলিশ এবং মুদ্রার নাম জলোটি।

  • পর্তুগালঃ দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপের আরেকটি সেনজেনভুক্ত দেশের নাম পর্তুগাল। দেশটির রাজধানীর নাম লিসবন। পর্তুগিজ হল দেশটির অফিসিয়াল ভাষা। বর্তমানে দেশটিতে ইউরো মুদ্রা প্রচলিত।

  • স্লোভাকিয়াঃ মধ্য ইউরোপের স্থল বেষ্টিত প্রজাতন্ত্রিক সেনজেনভুক্ত একটি দেশ স্লোভাকিয়া। দেশটির রাজধানীর নাম ব্রাতীস্লাভা। দেশটিতে বর্তমানে অভিন্ন ইউরো মুদ্রা প্রচলিত। দেশটির অফিসিয়াল ভাষা স্লোভাক।

  • স্লোভেনিয়াঃ মধ্য ইউরোপের সেনজেনভুক্ত একটি দেশ স্লভেনিয়া। যুগোস্লাবিয়ার কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার পর দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ জাতিসংঘ ও ন্যাটোর সদস্য। দেশটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত। দেশটির রাজধানীর নাম লিজুব্লিজানা। দেশটির অফিসিয়াল ভাষা স্লোভেনিয়ান। বর্তমানে দেশটিতে ইউরো মুদ্রা প্রচলিত।

  • স্পেনঃ দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপের একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ স্পেন। দেশটির রাজধানীর নাম মাদ্রিদ। দেশটির অফিসিয়াল ভাষা স্প্যানিশ, যা পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় ভাষা হিসেবে সুপরিচিত। দেশটিতে বর্তমানে অভিন্ন ইউরো মুদ্রা প্রচলিত। দেশটির পাসপোর্ট বিশ্বের মধ্যে একটি শক্তিশালী পাসপোর্ট হিসেবে বর্তমান সূচকে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

  • সুইডেনঃ ইউরোপের তৃতীয় সর্ববৃহৎ দেশ সুইডেন। এটি একটি উত্তর ইউরোপের স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ। দেশটি অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও উন্নত জীবন যাত্রার জন্য সুপরিচিত। দেশটির রাজধানীর নাম স্টকহোম এবং সুইডিশ হল অফিসিয়াল ভাষা। বর্তমানে দেশটির মুদ্রার নাম সুইডিশ ক্রোনা।

  • সুইজারল্যান্ডঃ পশ্চিম মধ্য ইউরোপের একটি দেশ সুইজারল্যান্ড। দেশটির চারিদিকে স্থল দ্বারা বেষ্টিত। দেশটির রাজধানীর নাম জুরিখ। দেশটির মুদ্রার নাম সুইস ফ্রাঙ্ক। দেশটি তার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, শিক্ষা ব্যবস্থা, ভ্রমণ ও উচ্চ জীবনযাত্রার জন্য পরিচিত। সারা বিশ্বের পর্যটকদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যস্থান সুইজারল্যান্ড।

  • আইসল্যান্ডঃ আইসল্যান্ড উত্তর ইউরোপের অবস্থিত একটি দ্বীপ দেশ, আটলান্টিক সাগরের উপর অবস্থিত। এটি ব্রিটেনের পশ্চিমে গ্রিনল্যান্ড আর নরওয়ের মাঝামাঝি অবস্থিত। দেশটির সরকারি ভাষা আইসল্যান্ডিক এবং সরকারি মুদ্রা আইসল্যান্ডিক ক্রোনা। আইসল্যান্ডের রাজধানী হলো রেকিয়াভিক।

  • ক্রোয়েশিয়াঃ অ্যাড্রিয়াটিক সমুদ্র সীমানায় অবস্থিত ইউরোপের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের একটি ছোট দেশ। এই দেশকে ঘিরে রয়েছে সার্বিয়া, হাঙ্গেরি, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, স্লোভেনিয়া এবং মন্টেনেগ্রো দেশগুলির সীমানা। ক্রোয়েশিয়ার সরকারি ভাষা ক্রোয়েশিয়ান। দেশটির রাজধানী হলো জাগরেব। প্রথমে ক্রোয়েশিয়ায় কুনা ব্যবহার হলেও ২০২৩ সাল থেকে তারা ইউরোপিয়ান মুদ্রা ব্যবহার করা শুরু করে।

  • বুলগেরিয়াঃ ক্রোয়েশিয়ার মতও এটি ইউরোপের দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলে একটি দেশ। দেশটির রাজধানীর নাম সোফিয়া এবং সরকারি মুদ্রা হলো বুলগেরিয়ান লেভ। বাল কান উপদ্বীপে অবস্থিত এই দেশটিকে ঘিরে উত্তরে রয়েছে রোমানিয়া, দক্ষিণে গ্রিস ও তুরস্ক, পশ্চিমে সার্বিয়া ও উত্তর মেসিডোনিয়া এবং পূর্বে কৃষ্ণনগরের উপকূল।

  • রোমানিয়াঃ পূর্বে মলডোভা, পশ্চিমে হাঙ্গেরি ও সার্বিয়া, উত্তরে ইউক্রেন এবং দক্ষিণে বুলগেরিয়া দ্বারা বেষ্টিত একটি ইউরোপের দক্ষিণ-পুর্ব অঞ্চলের দেশ। দেশটির অফিসিয়াল ভাষা হল রোমানিয়ান। রোমানিয়ান লিউ রোমানিয়ার অফিসিয়াল মুদ্রা। এর রাজধানী হল বুখারেস্ট।

সেনজেন ভুক্ত দেশ কয়টি ২০২৫

ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশ কয়টি ২০২৫ জানতে হলে আর্টিকেলের এই অংশটি পড়ুন। প্রতিবছর সেনজেন চুক্তির আওতায় ইউরোপের নতুন নতুন দেশ যুক্ত হচ্ছে। ১৯৮৫ সালে ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যকার ছোট শহর সেনজেনে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর ইউরোপের বহু দেশ এই চুক্তির আওতায় যোগ দিয়েছেন।

বর্তমানে সেনজেনভুক্ত দেশ 2025 ২৯টি। সেনজেনভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে-ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, গ্রীস, হাঙ্গেরি, ইতালি, লাটভিয়া, লিচেনস্টেইন, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, মালটা, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড এবং সর্বশেষে যুক্ত হওয়া দেশ ক্রোয়েশিয়া।

এই দেশগুলো একত্রে মিলেমিশে একটি অভিন্ন ভ্রমণ এলাকা বা অঞ্চল তৈরি করেছে, এর ফলে একজন পর্যটক একবার সেনজেন ভিসা পেলে এই ২৭টি দেশের মধ্যে আলাদা ভিসা ছাড়াই প্রবেশ করতে পারেন।

এক্ষেত্রে আপনি যে সুবিধা পাবেন তা হল, আপনার কাছে যদি ফ্রান্স বা সুইজারল্যান্ড এর কোন ভিসা থাকে তাহলে এই এক ভিসা দিয়ে আপনি সেনজেনভুক্ত অন্য যেকোন দেশ যেমনঃ ইতালি, জার্মানি সহ যেকোন দেশে যেতে পারবেন বা ভ্রমণ করতে পারবেন। নতুন করে আপনার ভিসা বা পাসপোর্ট করার প্রয়োজন হবে না।

এটি শুধু পর্যটকদের জন্য নয়, বরং ব্যবসায়িক কার্যক্রম, গবেষণা, চিকিৎসা এবং পড়াশোনার ক্ষেত্রেও ব্যাপক সুযোগ তৈরি করেছে। সেনজেন চুক্তি ইউরোপের মধ্যে আন্তঃদেশীয় সম্পর্ক আরও দৃঢ় করেছে এবং নাগরিকদের চলাফেরা সহজ করে দিয়েছে। তবে বিদেশি পর্যটক বা ভ্রমণকারী হিসেবে প্রতিটি দেশের নিয়ম কানুন সম্পর্কে জেনে রাখা এবং তা পালন করা কর্তব্য।

সেনজেন ভুক্ত সর্বশেষ দেশ কোনগুলো

সেনজেন ভুক্ত সর্বশেষ দেশ কোনগুলো আপনারা অনেকেই এ বিষয়ে জানতে চান। সেনজেন অঞ্চলের সম্প্রসারণের সাম্প্রতিকতম পদক্ষেপ হিসেবে ২০২৪ সালের শেষ ও ২০২৫ সালের শুরুতে রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া দুটি দেশ পুরোপুরি সেনজেন চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। 

এর আগে এই দুই দেশ আকাশ ও সমুদ্র পথে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ তুলে নেয় ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ, আর ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থল সীমান্ত নিয়ন্ত্রণও চিরতরে তুলে দেওয়া হয় । অর্থাৎ বর্তমানে সেনজেনভুক্ত সর্বশেষ দেশ হলো দুটি- বুলগেরিয়া ও রোমানিয়া।

দেশ দুটি ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে স্থল সীমান্তে অবস্থিত চেকপোস্ট পুরোপুরি ভাবে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। 
আরো পড়ুনঃকুয়েত ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা ২০২৫

এই দুটি দেশ অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ফলে বর্তমানে সেনজেন ভুক্ত অঞ্চলে বর্তমানে মোট ২৯টি দেশ রয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি EU সদস্য ভুক্ত দেশ এবং ৪টি EU-অসদস্য দেশের সঙ্গে এই দুই দেশও যুক্ত হয়েছে ।

রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া সেনজেনভুক্ত দেশের চুক্তিতে আসার ফলে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থার উন্নতির গতি মসৃণ ও ত্বরান্বিত হয়েছে হয়েছে। পর্যটক, প্রযুক্তিবিদ, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহনে সুবিধা তৈরি হয়েছে, কারণ রোমানিয়া ও বুলগেরিয়ার সীমান্তপথে আর আর্থসীমান্ত বাধা নেই ।

ইউরোপের-সেনজেনভুক্ত-দেশের-তালিকা

সেনজেন ভুক্ত দেশ মানে কি

সেনজেন ভুক্ত দেশ মানে হল ইউরোপের সেই সকল দেশ যারা নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক চুক্তির ভিত্তিতে সীমান্ত খুলে দিয়েছে। এর ফলে সেনজেনভুক্ত দেশের আওতাধীন এক দেশ থেকে আরেক দেশে যেতে নতুন করে ভিসা বা পাসপোর্ট চেক প্রয়োজন হয় না। একটি দেশের ভিসা দিয়ে সেনজেন অঞ্চলের সকল দেশে যাতায়াত বা ভ্রমণ করা যায়।

যে চুক্তির মাধ্যমে সেনজেনভুক্ত দেশ বা অঞ্চল গঠিত হয়েছে সেই চুক্তির নাম ‘সেনজেন চুক্তি, যা প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৮৫ সালে। ধীরে ধীরে অনেক ইউরোপীয় দেশ এতে যুক্ত হতে থাকে। 

ফলে যারা সেনজেন অঞ্চলের কোনো একটি দেশের ভিসা পান, তারা এই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোতেও অবাধে ঘুরতে পারেন, আলাদা ভিসা ছাড়াই। এই ব্যবস্থা ইউরোপে পর্যটন, ব্যবসা ও মানুষের চলাচলকে সহজ করেছে। সেনজেনভুক্ত দেশগুলো শুধু রাজনৈতিকভাবে একত্র নয়, বরং বাস্তবিক অর্থেই এক ধরনের অভিন্ন সীমান্ত নীতিতে একসাথে কাজ করে যাচ্ছে।

সেনজেন দেশের সুবিধা কি

সেনজেন দেশের সুবিধা গুলো জানতে হলে আর্টিকেলের এই অংশটি পড়তে হবে। সেনজেন চুক্তির আওতার দেশগুলোর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, একটি মাত্র ভিসা দিয়েই সেনজেনভুক্ত সব দেশে অবাধে যাতায়াত করা যায়। এর ফলে, সেনজেন অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য, ভ্রমণ সহজ হয়ে গিয়েছে।

এতে সময় যেমন বাঁচে, খরচও অনেক কমে যায়। এছাড়া সেনজেনভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সীমান্তে পাসপোর্ট চেক না থাকায় যাতায়াত অনেক সহজ হয়, যেটা পর্যটকদের জন্য এক বিশাল সুবিধা। বাড়তি খরচ ছাড়াই ইউরোপের বহু দেশের টুরিস্ট হিসেবে ভ্রমণ করতে পারে।

শিক্ষার্থীরাও উপকৃত হয়, কারণ গবেষণা বা এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের সময় বিভিন্ন দেশে সহজে যাওয়া যায়। সব মিলিয়ে, সেনজেন একটি নমনীয়, আধুনিক এবং কার্যকর ব্যবস্থাপনা যা ইউরোপজুড়ে মানুষ ও পণ্যের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করেছে।

ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীদের জন্য বহু দেশে দ্রুত যাওয়া-আসা সম্ভব হয়। শিক্ষার্থীরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সহজে অংশ নিতে পারে গবেষণা বা এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে। পণ্য পরিবহন ও ব্যবসায়িক যোগাযোগ অনেক গতিশীল হয় সেনজেন অঞ্চলে।

সেনজেন ভিসা কি

সেনজেন ভিসা হলো এমন একটি ভিসা, যেটি পেলে আপনি ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে একসাথে ঘুরে দেখতে পারেন, একটা ভিসা দিয়েই। এই ভিসা মূলতঃ সেনজেন চুক্তিতে অংশ নেওয়া দেশগুলোর মধ্যে অবাধ যাতায়াতের সুবিধা দেয়। 

তবে এর আওতায় থাকা সুবিধাগুলো অনেক বড়, কারণ এটি সময় ও টাকা দুই-ই বাঁচায় এবং একসাথে অনেক দেশের অভিজ্ঞতা নেওয়ার সুযোগ দেয়। তবে সেনজেন ভিসা শর্টস্টে ভিসা হিসেবে দেওয়া হয়ে থাকে। অর্থাৎ সেনজেন ভিসাধারী যে কোন লোক সর্বোচ্চ ৯০ দিন থাকার অনুমতি পাবেন।

সেনজেন ভিসা নিলে সেনজেনভুক্ত দেশের মধ্যে চলাফেরা করার জন্য আলাদা ভিসা করার প্রয়োজন হয় না, সাধারণত সেনজেন ভিসা ব্যবসা, চিকিৎসা ভ্রমণ বা পারিবারিক কারণে দেওয়া হয়ে থাকে।

আপনি যদি একটি সেনজেন ভিসা নিতে চান তাহলে সেনজেনভুক্ত যে দেশে আপনি বেশি সময় থাকার পরিকল্পনা করছেন সেই দেশের দূতাবাস থেকে নিতে হবে। সেনজেন ভিসা পেতে আপনাকে আপনার পাসপোর্ট, ছবি আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনা বিমার কাগজপত্র অর্থনৈতিক ক্ষমতা প্রমাণ স্বরূপ যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

সেনজেন ভিসার ক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, এই ভিসার মেয়াদ শেষ হলে তা বৃদ্ধি করা যায় না, আপনাকে আবার নতুন করে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

ইউরোপের-সেনজেনভুক্ত-দেশের-তালিকা

ইউরোপের নন সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকা ২০২৫

ইউরোপের নন সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকা 2025 সম্পর্কে আর্টিকেলের এই পর্যায়ে জানতে পারবেন। ইউরোপের যে সকল দেশ সেনজেন চুক্তির আওতাধীন নয়, সেই সকল দেশ মূলতঃ ইউরোপের সেনজেন ভুক্ত দেশের তালিকার অন্তর্ভুক্ত।

সাধারণত ইউরোপের এই সকল দেশ সেনজেন ভিসার আওতায় পড়ে না, তাই ঐ সকল দেশে যাওয়ার জন্য আলাদা ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। অথবা নির্দিষ্ট দেশের নিয়ম অনুযায়ী ভ্রমণ করতে হয়। নন-সেনজেন দেশগুলো তাদের নিজস্ব সীমান্ত আইন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ভিসা নীতিমালা বজায় রেখেছে। 

তবে ইউরোপের সেনজেন ভুক্ত দেশের মতো নন সেনজেন ভুক্ত দেশগুলোও পর্যটনের জন্য আকর্ষণীয় এবং ঐতিহাসিকভাবে দেশ হিসেবে গুরুত্ব রয়েছে।

আরো পড়ুনঃইতালিতে সর্বনিম্ন বেতন কত আপডেট তথ্য
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আপনি যদি যুক্তরাজ্য ভ্রমণ করতে চান তাহলে সেনজেন ভিসা এক্ষেত্রে কার্যকর হবে না। আপনাকে ওই দেশের নিয়ম অনুযায়ী আলাদা ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

যদিও ভিসার ঝামেলা কিছুটা বেশি, কিন্তু এই দেশগুলোর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং স্থানীয় আতিথেয়তা অনেক পর্যটকের কাছে মনে রাখার মতো অভিজ্ঞতা তৈরি করে।

ইউরোপের নন সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকা (২০২৫ অনুযায়ী) নিচে দেওয়া হলঃ
  • যুক্তরাজ্য

  • আয়ারল্যান্ড

  • তুরস্ক

  • সাইপ্রাস

  • বেলারুশ

  • ইউক্রেন

  • মলডোভা

  • আলবেনিয়া

  • সার্বিয়া

  • বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা

  • মন্টেনিগ্রো

  • কসোভো

  • উত্তর মেসিডোনিয়া

  • জর্জিয়া

  • আর্মেনিয়া

  • আজারবাইজান

  • রাশিয়ার ইউরোপীয় অংশ

ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকা সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্নঃ বর্তমানে সেনজেনভুক্ত দেশের সংখ্যা কত?
উত্তরঃ ২০২৫ সালের হিসাবে সেনজেনভুক্ত দেশের সংখ্যা ২৯টি।

প্রশ্নঃ সেনজেনভুক্ত দেশের কয়েকটি নাম বলুন।
উত্তরঃ ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন।

প্রশ্নঃ সেনজেন ভিসা দিয়ে কয়টি দেশে যাওয়া যায়?
উত্তরঃ সেনজেন ভিসা দিয়ে ২৯টি দেশে ভ্রমণ করা যায়।

প্রশ্নঃ সর্বশেষ কোন দেশগুলো সেনজেনে যুক্ত হয়েছে?
উত্তরঃ রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া সর্বশেষ ২০২4–2025 সালে সম্পূর্ণভাবে সেনজেনে যোগ দেয়।

প্রশ্নঃ সেনজেনভুক্ত দেশগুলোতে ভিসা ছাড়া যাওয়া যায় নাকি?
উত্তরঃ বাংলাদেশসহ বেশিরভাগ দেশের নাগরিকদের জন্য সেনজেন ভিসা আবশ্যক।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকা ও ইউরোপের নন সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকা ২০২৫ সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আপনারা যদি এই বিষয়ে জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন আশা করি।

আপনারা যারা ইউরোপে ভ্রমণ করতে আগ্রহী তাদের সেনজেনভুক্ত ও নন  সেনজেনভুক্ত  দেশগুলোর তালিকা জানা জরুরী, যা আজকে আর্টিকেলটি পড়লে জানতে পারবেন। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;

comment url