শ্রমের মর্যাদা রচনা ২৫টি পয়েন্ট ( ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী)
শ্রমের মর্যাদা রচনার ২৫টি পয়েন্ট নিয়ে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের আজকের এই রচনাটি অনেক উপকারে আসবে আশা করি। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি পয়েন্ট বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
তুমি যদি ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হয়ে থাকো তাহলে আজকের এই রচনাটি পড়লে এমন সব পয়েন্ট পেয়ে যাবে যা তোমার রচনাকে ইউনিক হিসেবে উপস্থাপিত করবে। তাই একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রচনাটি মনোযোগ সহকারে ।
শ্রমের মর্যাদা
ভূমিকাঃ পৃথিবী এক বিশাল কর্মক্ষেত্র। আর শ্রমই মানুষের যথার্থ পরিচয়। শ্রমকে ভিত্তি করেই সম্ভব হয়েছে সমাজ-সংস্কৃতির বিকাশ, পরিপুষ্ট ও প্রতিষ্ঠা। তিক্ত হলেও এটি সত্য যে, একজন পরিশ্রমী ঝাড়ুদার, একজন অলস, আকর্মণ্য বিদ্বাণের চেয়ে মানুষ হিসেবে বেশি মর্যাদাসম্পন্ন। শ্রমের কারণেই পশুজগৎ থেকে মানুষ আলাদা। শ্রমই মানুষের অহংকার, তার ভূষণ।
শ্রম কী ও কত প্রকারঃ 'শ্রম' শব্দের আভিধানিক অর্থ মেহ্নত, পরিশ্রম, কাজ। সাধারণভাবে যেকোনো কাজকেই শ্রম ধরা হয়। শ্রমকে আপাতত দুই ভাগে বিভক্ত করা যায়। যথা- (১) কায়িক শ্রম এবং (২) মানসিক শ্রম। কায়িক শ্রম মূলত শারীরিক ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট শ্রম। আর মানসিক শ্রম হলো মস্তিষ্ক ও বুদ্ধিমত্তা সংলিষ্ট শ্রম। দুই শ্রমই আমাদের জীবনে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। দুই শ্রমের ফলেই আমরা আজ এই পর্যন্ত এসেছি। তাই কোনো শ্রমকেই ছোটো করে দেখার সুযোগ নেই।
মানসিক শ্রমঃ কোনো কাজে মনঃ ও মেধা শক্তির ব্যবহারই মানসিক শ্রম। কোনো কাজ শুধু করলেই হয় না, তা সঠিক উপায় কতস ও সুষ্ঠু উপায়ে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজন মানসিক শ্রম। অলস ব্যক্তির মাথায় কুচিন্তা ছাড়া আর কিছুই আসে না। অন্যদিকে যে ব্যক্তি কর্মের সাথে সর্বদা জড়িত থাকে তার মাথায় কোনো কুচিন্তা আসে না। পৃথীবির সব মহামানব তাই এ পর্যন্ত আসতে পেরেছেন।
কায়িক শ্রমঃ সকলেরই এই পৃথীবিতে বেঁচে থাকার জন্য শারীরিক ও মানসিক শ্রম করতে হয়। মানসিক শ্রমিক একটি কাজের সৃষ্টি করে। আর কায়িক শ্রম সেই কাজকে বাস্তবায়ন করে। কায়িক শ্রম করা খুবই প্রয়োজনীয়। আমাদের সৃষ্টিকর্তা আমাদের হাত, পা, মাথা দিয়েছেন, যাতে আমরা শারীরিক শ্রমের মাধ্যমে নতুন নতুন জিনিস বানাতে ও উৎভাবন করতে পারি। তাই কায়িক শ্রমের মাধ্যমে যারা জীবিকা নির্বাহ করা উচিৎ এবং যারা করে তাদের সম্মান করা উচিৎ।
শ্রমের গুরুত্বঃ পৃথিবীতে শ্রম ছাড়া কোনো মানবসন্তানেরই মর্যাদা নেই। তাই শ্রমের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। সাফল্য, সুখ, ঐশ্বর্য, ধন---- সবকিছুরই উৎস শ্রম। বাংলায় একটি প্রবাদ আছে---
"পরিশ্রমে আনে ধন পূণ্যে আনে সুখ, আলস্য দরিদ্র আনে পাপে আনে দুখ।"
অর্থাৎ এখানে মূলত প্রকাশ করা হয়েছে অলসতার কোন বেগ নেই। পরিশ্রমই একমাত্র আনতে পারে মানুষের ধন, সুখ। আলোচ্যের কারণে মানুষ দুঃখী হয়ে পড়ে। নিজের শরীর ও মস্তিষ্ক সঠিক কাজে ব্যবহার না করার ফলে কোন কিছুই সুস্থ থাকেনা। অলস মানুষ হয়ে পড়ে দরিদ্র। মূল্যবান কাজ ব্যতীত এই পৃথিবীতে ধনবান হওয়া, সফল হওয়া সম্ভব নয়। তাই মানুষের জন্য শ্রম ব্যতীত আর কিছু নেই। শ্রমই মানুষকে গড়তে সাহায্য করে।
মহামানবদের কাছে শ্রমের মর্যাদাঃ বিশ্বের সকল মহামানব ও মনীষী শ্রমের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তারা সব সময় শ্রমের ব্যাপারে মানুষকে উৎসাহিত করেছেন। মূলত তাদের অদম্য পরিশ্রমের ফলেই তারা পৃথিবীতে নিজেদের নাম প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন। যেহেতু তারা প্রতিষ্ঠিত তাই তাদের মতো সাফল্য অর্জন করতে হলে তাদের শিক্ষা, উপদেশ, পরামর্শ দিয়ে নিজেদের গড়া অত্যন্ত জরুরি। আমাদের প্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলে গেছেন-
"কৃষকের পুত্র কিংবা রাজার কুমার, সবারই রয়েছে কাজ এ বিশ্ব মাঝার"
অর্থাৎ শ্রমের ব্যাপারে মানুষের মধ্যে কোন ভেদাভেদ নেই। যে শ্রেণীর মানুষই হোক না কেন সবাইকেই করতে হবে পরিশ্রম। যারা পরিশ্রম করে মূলত তারাই হতে পারে অন্যদের থেকে আলাদা। মহাত্মা গান্ধীও ছিলেন শ্রমের ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাসী। তিনি নিজের হাতে চরকা কেটে কাপড় বানাতেন, যদিও চাইলেই তিনি এই কাজের জন্য কোন লোক রাখতে পারতেন। অন্ধ ও বধির হওয়া সত্ত্বেও হেলেন কেলার নিজের পড়ালেখা ও লেখালেখি চালিয়ে পৃথিবীর মানুষের মধ্যে মানসিক শ্রমের গুরুত্ব ও মর্যাদা তুলে ধরেছেন। বিশ্বের ইতিহাস নাড়াচাড়া করলেই এরকম অনেক দৃষ্টান্ত দেখা যায়। আবার বলা হয়ে থাকে-
"When Adam delved and Eve span,
who was then the gentleman?"
অর্থাৎ আমাদের আদি পিতা ও আদি মাতা পৃথিবীতে যখন এসেছিলেন তখন সাথে কোন দাস-দাসী নিয়ে আসেননি। তবুও তারা তাদের কাজ চালিয়ে যেতে পেরেছেন এবং তাদের কারণেই আমরা আজ এই পর্যন্ত পৌঁছেছি। মানুষের জন্য আলস্য কখনোই ছিল না। পৃথিবীর শুরু থেকেই মানুষ শ্রম করে আসছে। তাই এখন করতে আমাদের সমস্যা কি? সবারই তাই শ্রম করতে হবে।
শ্রম সম্পর্কে মনীষীদের ধারণাঃ মহামানবদের মতো পৃথিবীর সকল মনীষীও শ্রমকে শ্রদ্ধা করে। শ্রম একটি মর্যাদা সম্পন্ন বিষয় বলে তারা মনে করেন। আমরা সবাই কমবেশি অনুধাবন করতে পারি যে, কোন মনীষীই শ্রম ছাড়া তাদের নিজস্ব পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেননি। তাদের সাফল্যের স্তম্ভই হলো শ্রম। তাদের চিন্তাভাবনা দেখলেই আমরা বুঝতে পারি শ্রম কতটা তাৎপর্যপূর্ণ। আলবার্ট আইনস্টাইন বিজ্ঞানের আশীর্বাদস্বরূপ। তিনি বিজ্ঞানের অনেক সমস্যার সমাধান এবং আবিষ্কারও করেছেন। তারপরও তিনি বলে গেছেন-
"I am not so smart, I just stay with problems longer"
এর মানে হলো আমি ততটা মেধাবী নয়, আমি শুধু সমস্যার সাথে বেশি সময় কাটাই।
এ থেকে বোঝা যায় যে, আলবার্ট আইনস্টাইন যে কোন সমস্যার পেছনে অনেক বেশি শ্রম দিতেন। সে সব সমস্যার সাথে বেশি সময় কাটাতেন। এর জন্যই তিনি সমস্যা বুঝতে পারতেন এবং সে সমস্যার সমাধান করতে পারতেন। এই প্রেক্ষিতে নেলসন ম্যান্ডেলার একটি উক্তি না বললেই নয়। সেটি হল-
এ থেকে বোঝা যায় যত পরিশ্রম মূলত ততই সুখ। সাফল্যের জন্য অনেকে পরিশ্রমই হতে প্রস্তুত নয়। তারা মনে করে তাদের জন্য যদি কোন উৎসাহ বা অনুপ্রেরণা থাকতো তবে তারা অবশ্যই পরিশ্রমী হয়ে উঠতো। এরকম চিন্তা ভাবনার প্রেক্ষিতে মনে করা ভালো যে, সাফল্যের চাবিকাঠি হল পরিশ্রম। কারণ মেধার থেকে বেশি প্রয়োজন কোন বিষয়ের প্রতি পরিশ্রমী হয়ে ওঠা। এর জন্য টমাস এডিশন বলে গেছেন-
উন্নত বিশ্বের শ্রমের মর্যাদাঃ বিশ্বের যে সকল দেশ আজ প্রতিষ্ঠিত তাদের সবারই মূলে রয়েছে পরিশ্রম। তারা শ্রমের মর্যাদা দিতে জানে দেখেই তারা আজ প্রতিষ্ঠিত। জাপানের মত দেশ শ্রমকে ধর্মের মত গুরুত্ব দেয়। তারা এই চেতনা নিয়ে থাকে যে, "Work is life" বা "জীবনে হলো কর্ম"। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় শ্রমিক দিবস, শ্রমিক ইউনিয়ন গঠনসহ ন্যূনতম মজুরি আইন জারি আছে। যুক্তরাজ্যের লোকেরা মনে করে 'কাজ মানেই মর্যাদা' তাই তাদের সমাজে যেকোন শ্রেণীর শ্রমিককেই সম্মান করা হয়। আবার, রাশিয়ায় বিদ্যালয় ও সমাজে শেখানো হয় ' দেশের জন্য কাজ করা মানেই দেশকে শক্তিশালী করা'। যার কারণে তারা শ্রমিকদের প্রতি দৃঢ় মর্যাদাশীল এবং শ্রম করতে উৎসাহিত হয়।
বাংলাদেশের শ্রমের মর্যাদাঃ জাতীয় উন্নয়নের শ্রমিকের ভূমিকা ব্যাপকভাবে এখন স্বীকৃত। কারণ বাংলাদেশের পোশাক শিল্প, কৃষি, নির্মাণ ও সেবা খাত---সব জায়গাই শ্রমিকের অবদান রয়েছে। তাই আগের তুলনায় বাংলাদেশে শ্রমিকদের মর্যাদা এখন বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এখন শ্রমিকদের জন্য কর্মক্ষেত্রে রয়েছে ক্যান্টিনের সুব্যবস্থা। অনেক প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের যানবাহন সুবিধা দিয়ে থাকে। যার কারণে তারা খুব সহজে ও নিরাপদে কর্মস্থানে পৌঁছাতে পারে। তবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কিছু কিছু আচরণ এখনো শ্রমিকের মর্যাদা হানি করছে। যেমন অনেক সময় শ্রমিক তার প্রাপ্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হয়। এ বিষয়ে আইনের কঠোর প্রয়োগ ও সামাজিক সচেতনতা নেই। শ্রমিকের উপর শারীরিক অত্যাচারও করতে দেখা যায়। যা শ্রমের প্রাপ্য মর্যাদায় বাধা সৃষ্টি করে।
ধর্মের দৃষ্টিগুণে শ্রমঃ পৃথিবীর সব ধর্মই শ্রমকে অত্যন্ত সম্মানজনক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে। বাংলাদেশের মূল চারটি ধর্মের দৃষ্টিগুণে শ্রম দেখলেই তা বুঝা যায়। ইসলামে শ্রমের স্থান অত্যন্ত সম্মানজনক। হালাল উপার্জন করা মানুষের ধর্মীয় দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। হাদিসের বলা হয়েছে,
"কর্মীর ঘাম শুকানোর আগে তার মজুরি প্রদান কর।"
হিন্দু ধর্ম শ্রমকে ধর্মের অংশ হিসেবে দেখে। শ্রমকে আত্মনয়নের উপায় হিসেবে দেখা হয়। মানুষের অধিকার আছে শুধু পরিশ্রম করার উপর, ফলের উপর নয়---- এ বিশ্বাস নিয়ে জীবন পরিচালনা করে হিন্দুরা। অন্যদিকে বৌদ্ধ ধর্মে শ্রমকে সম্মুখ আজ জীবিকা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। অলসতা, অন্যের উপর নির্ভরশীলতা ভালো বৌদ্ধ ধর্মে করা ভাবে নিষিদ্ধ। আবার, শ্রমের উপর জোর দিয়ে খ্রিস্ট ধর্মগ্রন্থে ভিন্নভাবে এর কথা উল্লেখ রয়েছে। বাইবেলে বলা হয়েছে,
"যে কাজ করে না, সে খাবার পাওয়ার ও যোগ্য নয়"
খ্রিস্ট ধর্মে শ্রম ঈশ্বর প্রদত্ত দায়িত্ব। এছাড়াও পৃথিবীতে আরো অন্যান্য অনেক ধর্মগ্রন্থ রয়েছে যেখানে শ্রমের প্রতি গুরুত্বারো করা হয়েছে। মূলত সব ধর্মেই শ্রম খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়।
শ্রমী মানুষের স্বীকৃতিঃ শ্রমি মানুষ শিক্ষাকে জীবনের সাথে যুক্ত করে। তাদের শিক্ষা শুধু বই পড়াতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং কাজ ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অর্জিত বাস্তব শিক্ষায় তারা শিক্ষিত। শ্রমের মাধ্যমে মানুষের শৃঙ্খলা, সময় ব্যবস্থাপনা, সহনশীলতা এবং সমস্যার সমাধানের দক্ষতার বিকাশ ঘটে। তারাই উৎপাদনশীলতা ও অর্থনৈতিক শক্তি চালিত রাখে। জাতির প্রগতিতে তাদের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি। পরিশ্রমই ব্যক্তির ঘরে আসে শান্তি আনন্দ ও মর্যাদা। তারাই জীবনের সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়। শ্রমিক মানুষ আত্মনির্ভরশীল, স্বাধীন ও সাবলীল। আবার, তারাই সমাজের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ, অনুপ্রেরণার উৎস।
অলসতার ফলঃ যারা অলস থাকে, তারা জীবনে কোন লক্ষ্যই অর্জন করতে পারে না। তাদের শুধু সময় নষ্ট হয়। জীবনের অনেক অংশ তারা কোন কিছু না করেই কাটায়। যার কারণে এই জীবনে কোন অভিজ্ঞতা বা দক্ষতা অর্জন করতে পারেনা তারা। তাদের কারণে পরিবার ও সমাজের উন্নতি হতে বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক সময় এক অলস ব্যক্তির জন্য কষ্ট ভোগ করতে হয় অন্য মানুষের। অথচ এই জীবন তারা পেয়েছেই কর্ম করার জন্য। অলস ব্যক্তির মর্যাদা তাই থাকে না। সমাজের মানুষ তাদের বিষাদ দৃষ্টিতে দেখে। অলসতার কারণে তাদের মনে বাসা বাঁধে হতাশা, যার কারণে তারা হয়ে ওঠে আত্মবিশ্বাসীহীন ও অনুপ্রেরণাহীন। সব সময় তারা লজ্জার শিকার হয়।
ছাত্রজীবনের শ্রমের গুরুত্বঃ ছাত্রজীবনই কোন একজন মানুষের বীজ বপনের সঠিক ও যথাযোগ্য সময়। এই বিজ বপনই ভবিষ্যত ঠিক করে। তাই এই বীজ বপণের প্রক্রিয়াকে গুরুত্বারোপ করে অবশ্যই উচিত ছাত্রদের পরিশ্রমী হয়ে ওঠা। পরিশ্রম ছাড়া কোন জিনিসে অর্জন সম্ভব নয়। পরিশ্রমই ছাত্ররাই পড়ালেখায় ভালো করে ও জীবনে ভালোমতো প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। শিক্ষক পরিশ্রমী ছাত্রের উদাহরণ দিয়েই বাকি ছাত্র-ছাত্রীদের শেখান বা অনুপ্রেরণা করেন। অন্যদিকে তারাই হয়ে ওঠে জীবনের সবচেয়ে সফলকামি। কেননা পরিশ্রমের ফল সব সময়ই মিষ্টি।
জাতীয় জীবনের শ্রমের গুরুত্বঃ এ পর্যন্ত যতগুলো রাষ্ট্র উন্নতির স্বর্ণ শিখরে পৌঁছেছে তাদের সকলেরই মূলমন্ত্র ছিল কঠোর পরিশ্রম। সৌমহীন কোন জাতি কখনো উন্নতি করতে পারে না। জগতের এত যে কীর্তি স্থাপিত হয়েছে তার মনে রয়েছে মানুষের চিন্তা, পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়। শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হলেই পরিশ্রমের প্রকৃত সুফল পাওয়া যায়। তা না হলে রাষ্ট্রের নাগরিক মর্যাদাহীন শ্রম বা কাজ করতে চায় না। তাই জাতীয় জীবনের সকল পর্যায়ে শ্রমের গুরুত্ব অপরিসীম। সমবেত ভাবে পরিশ্রমী হয়ে উঠলে জাতীয় উন্নতি অসাধ্য কিছু নয়।
ব্যক্তিগত জীবনের শ্রমচেতনাঃ আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের ধারণা দৈহিক শ্রম আত্মসম্মানের ক্ষেত্রে হানিকর। কিন্তু এ চেতনা আমাদের সমাজের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং ভ্রান্ত। দৈহিক শ্রম আমাদের আত্মসম্মানের পরিপন্থী নয়, বরং তার সমাজে আত্ম প্রতিষ্ঠার প্রধান উপায়। তাই প্রতিনিয়ত মানুষ নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে শ্রমজীবী হয়ে জীবিকা নির্বাহের কঠোর প্রয়াস চালাচ্ছে। শ্রমের সাথে আমাদের জীবনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। মানুষের ব্যক্তিত্বের উন্নয়ন ঘটায়। যারা পরিশ্রমী তারা নিজেদের অন্যদের থেকে আলাদা মনে করে, যার কারণে তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের জন্ম নেয়।
উপসংহারঃ সূর্যের সাথে উদ্ভিদ ও প্রাণীর সম্পর্কের মত শ্রমের সাথে সমাজও সভ্যতার নিবিড় সম্পর্কে বিদ্যমান। স্রম আসলে মানুষ ও তার সমাজ সভ্যতার আশীর্বাদস্বরূপ।। শ্রমিকের শ্রম মানব সভ্যতার জননী। শ্রমকে যথাপযুক্ত মর্যাদা দেয়ার মাধ্যমে আমরা বিশ্বের বুকে উন্নত জাতি হিসেবে স্থান করে নিতে পারব।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের নদ নদী রচনা-২০টি পয়েন্ট ( ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত )
passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;
comment url