ডোমেইন কিভাবে ব্লগারে কানেক্ট করবেন
ডোমেইন কিভাবে ব্লগারে কানেক্ট করবেন তা সম্পর্কে হয়তো অনেকেই ভালো ভাবে জানেন না। তাই আপনাদের উচিত এই বিষয়টি সম্পর্কে ভালো ভাবে জেনে নেওয়া। এর ফলে আপনি খুব সহজেই ডোমেইন সেট আপ করে নিতে পারবেন।
অনেক ব্লগার রয়েছেন যারা পেইড ডোমেইন ক্রয় করে থাকেন। তখন এই ডোমেইন গুলো নিজেদের ব্লগে যোগ করার প্রয়োজন পড়ে। তাই চলুন ডোমেইন কিভাবে ব্লগারে কানেক্ট করবেন তা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নিই। পোস্ট সূচিপত্র:
ডোমেইন কিভাবে ব্লগারে কানেক্ট করবেন
অনেক গুলো ওয়েবসাইট রয়েছে যে গুলো তে সাধারণত ফ্রী তেই ব্লগ লিখে ইনকাম করা সম্ভব হয়ে থাকে। কিন্তু তারপরও অনেকে নতুন পেইড ডোমেইন ক্রয় করে থাকেন। কিন্তু তাদের অনেকের মধ্যেই এই বিষয়ে ভালো ধারণা থাকে না যে তারা কিভাবে এই ডোমেইন তাদের ব্লগিং সাইটে কানেক্ট করে নিবেন।
তাই এই কাজটি করার জন্যে আপনাকে বেশ কয়েকটা ধাপ অনুসরণ করে নিতে হবে। চলুন এক নজরে সে ধাপ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
১. প্রথমে আপনাকে আপনার ব্লগ একাউন্টটি লগ ইন করে নিতে হবে। আপনার যদি একাধিক ব্লগ একাউন্ট থেকে থাকে তাহলে আপনাকে প্রথমে সে একাউন্টটি লগ ইন করতে হবে যে একাউন্টে আপনি আপনার ডোমেইনটি সংযুক্ত করতে চান।
২. এরপর আপনার ব্লগ সাইটের বাম পাশে মেনু বারের সেটিংস থেকে পাবলিশিং অপশনে চলে যান। সেখানে গিয়ে কাস্টম ডোমেইন নামক অপশনটি তে ক্লিক করে নিন। সেটিংস অপশনের ভিতরে একটু নিচ দিকে তাকালেই এই অপশনটি আপনার চোখে পড়বে।
৩. কাস্টম ডোমেইনে ক্লিক করার পর আপনার সামনে একটি পপ আপ উইন্ড ওপেন হবে এখানেই আপনি আপনার ডোমেইন নেমটি বসাবেন। আপনার কাঙ্খিত ডোমেইন এর সাথে অবশ্যই WWW. সংযুক্ত করে নিবেন। তারপর সেভ বাটনে ক্লিক করে নিবেন।
উদাহরণ হিসেবে বলি, যদি আপনার ডোমেইন নেম হয়ে থাকে ordinaryit.com, তাহলে আপনাকে সেই পপ- আপ উইন্ডে বসাতে হবে www.ordinaryit.com।
৪. সেভ বাটনে ক্লিক করার পর ব্লগার আপনার ডোমেইনটি ভেরিফাই করতে ব্যর্থ হবে। তখন সে আপনার লেখা ডোমেইন নেম এর নিচের দিকে দুইটি CNAMEs রেকর্ড সহ একটি Eror মেসেজ দেখাবে৷ তার সাথে ৪ টি গুগল আই পি এস A রেকর্ড দেখাবে৷ এটি ফিক্স করার জন্যে, এই গুলো ডোমেইন নেমে এড করে নিতে হবে।
এই গুলো আপনার DNS ম্যানেজমেন্ট থেকে খুব সহজেই রেকর্ড গুলো পেতে পারেন। DNS management সেটিংস নিম্নে আলোচনা করা হবে।
এখানে আপনাকে একটু লক্ষ্য রাখতে হবে যে আপনি আসলে কেন DNS রেকর্ড যোগ করতে চাচ্ছেন। ডোমেইন ও ডি এন এস রেকর্ড যোগ করার আগে আপনি কোন কাজে এটি ব্যবহার করবেন তাও ধারণা রাখতে হবে।আমাদের আলোচ্য বিষয় হলো ব্লগার নিয়ে তাই ব্লগারে ডি এন এস সার্ভার যোগ করার জন্যে ডোমেইনের Default Nameserver ব্যবহার করতে হবে।
ডোমেইনে ডিফল্ট নেম সার্ভার আপডেট করার জন্যে করণীয় প্রয়োজনীয় ধাপ গুলো যথাক্রমে নিম্নরূপ :
১. প্রথমে আপনার ব্লগিং একাউন্টের হোস্টিং একাউন্টে কাস্টম এরিয়াতে গিয়ে সেখানে লগ ইন করে নিবেন। তারপর আপনার Dashboard থেকে ডোমেইন সেকশনে চলে যাবেন। কিংবা আপনি চাইলে বাম পাশে ডোমেইন ড্রপ ডাউন মেনু তে ক্লিক করে সেখান থেকে My Domains এ চলে যাবেন।
২. My Domains অপশনটিতে যাওয়ার পর আপনি এখানে আপনার সাইটের ডোমেইন গুলোর একটি তালিকা দেখতে পাবেন।
এই তালিকা থেকে আপনি যে ডোমেইন টি আপনার সাইটে এড করে নিতে চান তার বাম পাশে থ্রী ডট মেনুতে ক্লিক করে নিন। তারপর সেখান থেকে ম্যানেজমেন্ট ডোমেইন অপশনটি তে ক্লিক করে নিন।
৩. এখন ডান পাশের অপশন মেনু বার থেকে আপনি Nameservers বাটনে ক্লিক করে নিন। এখান থেকে আপনার কাঙ্ক্ষিত ডোমেইনটি সিলেক্ট করে নিন। তারপর Change নেম সার্ভার বাটনে ক্লিক করুন। তারপর একটি সাকসেস মেসেজ দেখতে পাবেন যেখানে বলা হয়েছে ডোমেইনের ডিফল্ট নেম সার্ভার সেট হয়েছে।
আপনার নেম সার্ভারটি আপডেট হয়েছে কি না তা জানার জন্য এই লিংকে ক্লিক করে দেখে নিন।
এবার রেকর্ড এড করার জন্য আবার আপনার সাইটে প্রথম পেজে ফিরে আসুন। তারপর সেখানে ডান পাশে ম্যানেজ ডি এন এস সার্ভারে ক্লিক করে DNS ম্যানেজমেন্ট সেকশনে চলে যান। এখানে আপনি এড রেকর্ড নামক আপশনটি পেয়ে যাবেন। CNAME রেকর্ড যোগ করার জন্য নিম্ন উল্লিখিড স্টেপ গুলো ফলো করুন:
- NAME : www টাইপ করুন।
- Type : এখানে CNAME সিলেক্ট করে নিন।
- TTL : এটি যেমন আছে ঠিক তেমন করেই রেখে দিন, এখানে কোনো পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই।
- Address/ Value : ghs.google.com টাইপ করুন।
দ্বিতীয় CName টি রেকর্ড করার জন্যে নিম্ন লিখিত স্টেপ গুলো ফলো করুন :
- Name : ব্লগার থেকে যে দুটি সিনেম পেয়েছিলেন, সেখান থেকে ২য় টি দেন।
- টাইপ : সি নেম সিলেক্ট করে নিন।
- TTL : পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই
- Value / Address : আপনার ব্লগার একাউন্টের ডোমেইন সেট আপ পেইজ থেকে ডিস্টিনেশন হিসেবে যে রেকর্ডটি দেওয়া হয়েছে তা দেন।
A রেকর্ড যোগ করার জন্যে নিম্ন লিখিত স্টেপ গুলো ফলো করুন :
- Name : আপনার ডোমেইন নেম টাইপ করুন অথবা # বা * টাইপ করে নিন।
- Type : A সিলেক্ট করে নিন।
- TTL : পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই
- Value / Address : প্রথমে IP অ্যাড্রেস দিন। এই ভাবে বাকি যে আরো তিনটি আই পি অ্যাড্রেস রয়েছে সে গুলোও ক্রমান্বয়ে উল্লেখ করে দিন।
ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রি কি
ডোমেইন কিভাবে ব্লগারে কানেক্ট করবেন তা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আপনারা জানতে পেরেছেন। ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রি হলো সমস্ত ডোমেইন নাম ও ইন্টারনেটের ডোমেইন নেম সিস্টেম এর টপ লেভেল ডোমেইন সংশ্লিষ্ট নিবন্ধক তথ্যের একটি ডাটা বেস। এটি সাধারণত তৃতীয় কোনো পক্ষের কাছে প্রশাসনিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে।
আরো পড়ুন : সেরা ২০টি টাকা ইনকাম করার অ্যাপ ২০২৫
বেশীর ভাগ রেজিস্ট্রি ডি এন এস এর টপ লেভেল ডোমেইন ও এটি দ্বিতীয় লেভেলে কাজ করে থাকে। একজন রেজিস্ট্রি অপারেটর সাধারণত এই কাজ গুলো করে থাকে৷ তিনি ডোমেইন এর সমস্ত প্রশাসনিক ডেটা সংরক্ষণ করে থাকে এবং একটি জোন ফাইল তৈরি করে যাতে প্রতিটি ডোমেইন এর জন্যে সার্ভার ঠিকানা থাকে।
ডোমেইন নেম কত ধরণের হয়
ডোমেইন কে সাধারণত চারটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে৷ এই গুলো যথাক্রমে নিম্নে দেওয়া হলো :
১. জেনারিক টপ লেভেল ডোমেইন ( gTLDs)
এটি সবচেয়ে বেশী ব্যবহার করা ডোমেইন নেম। এটি যে কোনো ওয়েব সাইটে ফিট করে। এই লেভেল এর ডোমেইন গুলোর মধ্যে কিছু সুপরিচিত ডোমেইন গুলো হলো যথাক্রমে ডট কম (.com), ডট অর্গ (.org) এবং ডট নেট (.net)। তা ছাড়া আবার এর পাশাপাশি আরো কিছু টপ লেভেল ডোমেইন রয়েছে যে গুলো হলো ডট এক্স ওয়াই জেড (. xyz), ডট বিজ (. biz) ও ডট টেক (. tech)।
২. স্ট্যান্ডার্ড টপ লেভেল ডোমেইন ( sTLDs)
এই লেভেলের ডোমেইন গুলো একটি সংস্থা কিংবা গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে থাকে।
আরো পড়ুন : ঘরে বসে অনলাইনে ইনকাম করার সহজ ১৫টি উপায়
যেমন ডট গব (.gov) এটি সরকারি ওয়েবসাইটের জন্যে। ডট ইডু ও ডট পোস্ট যথাক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্যে ও ডাক সেবার জন্যে।
৩. কান্ট্রি কোড টপ লেভেল ডোমেন ( ccTLDs)
আই এস ও কোডের অধীনে একটি অঞ্চল বা অবস্থান একটি নির্দিষ্ট অংশ নোট করে থাকে। যেমন বাংলাদেশের জন্যে ডট বিডি (. bd), USA এর জন্যে ডট ইউএস (. us) ও ইন্ডিয়ার জন্যে ডট ইন (. in) ইত্যাদি।
৪. ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডোমেইন
এটি হলো একটি ডোমেইন নেম নিয়ে গঠিত যা ARPA প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। এই ডোমেইন নেমটি প্রাথমিক ভাবে ইন্টারনেট অবকাঠামো সংরক্ষণের জন্যে কাজ করে থাকে।
ডোমেইন নেম কি
ডোমেইন কিভাবে ব্লগারে কানেক্ট করবেন তা সম্পর্কে জেনেছেন। ডোমেইন নেম বলতে বুঝানো হয়ে থাকে কোনো একটি ওয়েব সাইটের নাম কে। এটি সাধারণত ক্লাইন্ট কম্পিউটার কে ওয়েব সার্ভারের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে ব্যবহার করা হয়। একটি ডোমেইন নেম সংক্রান্ত সকল কিছু নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ডোমেইন নেম সিস্টেম।
প্রত্যেক ওয়েব সাইটের সাধারণত একটি নির্দিষ্ট আই পি ঠিকানা থাকে। কিন্তু এই আই পি ঠিকানা অনেক সংখ্যার সমন্বয়ে তৈরি হয়ে থাকে। এটি মনে রাখা অনেক কষ্টকর হয়ে থাকে। তাই ডোমেইন নেম বিষয়টি চলে এসেছে।
এই ডোমেইন নেম সাধারণ এক বা দুই শব্দের হয়ে থাকে। যার ফলে এটি মনে রাখা খুবই সহজ হয়ে থাকে। আবার এক বা একাধিক কম্পিউটার কে ইন্টারনেটে চেনার জন্য ডোমেইন নেম ব্যবহার করা হয়।
হোস্টিং কি
হোস্টিং হলো স্টোরেজ বা স্পেস যেখানে সাধারণত আমাদের বিভিন্ন ডাটা গুলো স্টোর করে রাখা হয়। যখন কোনো ভিজিটর আপনার সাইট ভিজিট করার জন্যে আপনার ওয়েব সাইটে প্রবেশ করে থাকে তখন আপনার ডাটা বা ফাইল গুলো সেই হোস্টিং থেকে লোড নেয়।
আপনার এই হোস্টিং স্পিড এর উপরেই আপনার সাইটের স্পিড নির্ভর করে থাকে। সে জন্যে ভালো হোস্টিং সিলেকশন করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ডোমেইন হোস্টিং কেন প্রয়োজন
ডোমেইন কিভাবে ব্লগারে কানেক্ট করবেন তা সম্পর্কে বলা হয়েছে। ডোমেইন হোস্টিং বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যখন ইন্টারনেটে কোনো তথ্য খুঁজে থাকি তখন সাধারণ এই ডোমেইন হোস্টিং এর মাধ্যমেই তথ্য গুলো আমাদের সামনে চলে আসে।একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা ও তা পরিচালনা করার জন্যে ডোমেইন হোস্টিং এর প্রয়োজন পড়ে। একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা হয় বিভিন্ন ধরণের কোড, ইমেজ, ভিডিও ও অডিও ইত্যাদি দিয়ে। এই ফাইল গুলো ইন্টারনেটে রাখার প্রয়োজন পড়ে। ইন্টারনেটে যেহুতো হাজার ফাইল থাকে তাই এই গুলো একটি নির্দিষ্ট ঠিকানায় রাখতে হয়। উক্ত ঠিকানাটিই হলো ডোমেইন হোস্টিং।
ব্লগ কি
ব্লগ হলো একটি অনলাইন জার্নাল বা তথ্য মূলক একটি ওয়েবসাইট। এটি ওয়েবব্লগ এর সংক্ষিপ্ত রূপ। একটি ব্লগ হলো অনলাইন ডায়েরি যা যেখানে এক বা একাধিক লেখক নিয়মিত ভাবে সেখানে পোস্ট করতে পারেন। এখানে তারা বিভিন্ন ধরণের ব্লগ লিখে থাকেন এবং সে গুলো পোস্ট করে থাকেন।
ব্লগিং কিভাবে শুরু করবেন
ব্লগিং শুরু করার জন্যে আপনাকে প্রথমে বেশ কয়েকটা কাজ করে নিতে হবে। তাই ব্লগ লেখার জন্যে প্রথমে আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে যে আপনি আসলে কোন বিষয়ের উপর ব্লগ লিখতে চাচ্ছেন।
বিষয়টিকে স্থির রেখে তারপর আপনি উক্ত বিষয়ের উপর বিভিন্ন জায়গা থেকে তথ্য জোগাড় করা শুরু করবেন। এই ভাবে প্রয়োজনীয় কনসেপ্টচুয়াল তথ্য গুলো সংগ্রহ করে ব্লগ লেখা শুরু করতে পারেন।
ব্লগ লিখে কি আয় করা যায়
আপনি চাইলে ব্লগ লিখে ঘরে বসেই ইনকাম শুরু করে দিতে পারবেন। এখন অনেকেই ব্লগিং করে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে। তাই আপনি যদি চান তাহলে ব্লগিং করে টাকা ইনকান করতে পারবেন খুব সহজেই। আয় করার জন্যে ভালো একটি মাধ্যম হলো ব্লগ লিখা।
তাই প্রথমে আপনি ব্লগিং সাইট খুলে নিয়ে সেখানে গুগল অ্যাডসেন্সের অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। অ্যাডসেন্সের অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার মাধ্যমে আপনি ব্লগে বিজ্ঞাপন দিয়ে ইনকাম করতে পারবেন।
লেখকের শেষ মন্তব্য
প্রিয় পাঠকগণ, আজকের আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে ডোমেইন কিভাবে ব্লগারে কানেক্ট করবেন এই বিষয়টি কে ঘিরে। আশা করি বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। এই বিষয়ে আপনার মন্তব্য জানাতে পারেন। পাশাপাশি এটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। 250109
passiondrivefiona র নীতিমালা মেনে comment করুন। প্রতিটি comment রিভিউ করা হয়;
comment url